২৩ শর্তে আরো দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সেঞ্চুরিতে উন্নীত
তরিকুল ইসলাম সুমন: বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর লেখাপড়ার মান নিয়ে নানান প্রশ্নের মধ্যেও সরকার আরো দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদন পাওয়া দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য দিয়ে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০০ পূর্ন হলো। নতুন অনুমোদন পেয়েছে খুলনায় খানবাহাদুর আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহীতে আহছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এর আগে দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ৯৮টি। যার মধ্যে বর্তমানে ৯৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ‘খুলনা খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়’ ও ‘আহছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’। বিশ্ববিদ্যালয় দুটির ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে যথাক্রমে-১৪০ কেডিএ, খান বাহাদুর আহছানউল্লাহা সড়ক, ছোট বয়রা, সোনাডাঙ্গা, খুলনা এবং ২১৬/১ তালাইমারি, পো. কাজলা, রাজশাহী-৬২০৫। বিশ্ববিদ্যালয় দুটির প্রতিষ্ঠাতা ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রেসিডেন্ট কাজী রফিকুল আলম। এর আগে তিনি ‘আহছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির’ অনুমোদন নিয়ে পরিচালনা করছেন।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদন দিয়ে আদেশ জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব মো. মহিউদ্দীন খান জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় দুটি অনুমোদনের প্রস্তাব আগেই পাঠানো হয়েছিল। মঙ্গলবার এই দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের তুলনায় পর্যাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় নেই। সেদিক বিবেচনা করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়া প্রয়োজন। আসলে বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনে সমস্যা না। সমস্যা হলো শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ করা।
২৩ শর্তে নতুন দুটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে ২৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব বা ভাড়া করা ভবন, কমপক্ষে তিনটি অনুষদ ও ছয়টি বিভাগ, পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি, ছাত্রছাত্রীদের জন্য কমনরুম, সেমিনার কক্ষসহ পর্যাপ্ত অবকাঠামো থাকতে হবে। পূর্বানুমোদন ছাড়া বিভাগ খোলা যাবে না।
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি জেড এন আর এফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় নামে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি স্থাপন করা হবে রাজধানীর গুলশানে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা ড. এম. জুবায়দুর রহমান।
অনুমোদনের অপেক্ষায় আরো ৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এগুলো হলো- বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়। এটি স্থাপনের আবেদন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উসৈশিং এমপি। শামসুল আলম নামে একজন সিঙ্গাপুর প্রবাসী শাহ মখদুম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আবেদন করেছেন। বিরোধী দলীয় নেতা নিজ নামে রওশন এরশাদ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ স্থাপনের আবেদন করেছেন। সাবেক এমপি এবং হুইপ এইচ এম গোলাম রেজা রাজধানীর সেনপাড়ায় সিঙ্গাপুর ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ স্থাপনের অনুমোদন চেয়েছেন। ‘অ্যাপোলা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন করেছেন সংসদ সদস্য শামসুল আলম ভূঁইয়া। পটুয়াখালীর লাউকাঠিতে সাউথ রিজন ইউনিভার্সিটি স্থাপনের আবেদন করেছেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ.স.ম. ফিরোজ। ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটি নামে রাজধানীর মহাখালীতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আবেদন করেছেন ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম মোশাররফ হুসাইন। বাংলাদেশ বৌদ্ধকৃষ্টি প্রচার সংঘের প্রেসিডেন্ট এইচ এন ভেন সঙ্ঘনায়ক শ্রদ্ধানন্দ মহাথের ইউনিভার্সিটি অব অতীশ দীপঙ্কর বাজরাগজনি স্থাপনের অনুমোদন চেয়েছেন।