নির্ভয়ার আর্তনাদেও ঘুম ভাঙেনি! ভারতে ধর্ষণ বাড়ছেই
ওমর শাহ: না, নয়াদিল্লির নির্ভয়া কা- থেকে কোনও শিক্ষা নিতে পারেনি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য প্রশাসন। শিক্ষা নিতে পারেনি পুলিশ, এমনকি নি¤œ আদালতও। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা গতকাল তাদের অনলাইন সংস্করণে এ মন্তব্য করে এক প্রতিবেদনে বলছে, ২০১২ সালের নির্ভয়া কা-ের পর গত ৫ বছরে ভারতে ধর্ষণের ঘটনা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। বিভিন্ন আদালতের তথ্য বলছে, ২০১২ থেকে ২০১৬, এই ৫ বছরে ভারতে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে ৬০ শতাংশ। আর ওই সব ঘটনায় শাস্তির হার আগেও যা ছিল, তেমনই রয়ে গিয়েছে।
‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)’-র পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ সালে দেশে ধর্ষণের যে মোট ৩৯ হাজার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, তার ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণের শিকার হয়েছিল শিশুরা। সে ক্ষেত্রে ৬ বছরের কম বয়সী শিশুরাও রেহাই পায়নি। ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুরা ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪-৫%। ১২ থেকে ১৬ বছরের কিশোরীরা ধর্ষণের শিকার হয়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ ক্ষেত্রে।
এনসিআরবি-র পরিসংখানে দেখা যাচ্ছে, ২০০৬ থেকে ২০১২ পর্যন্ত দেশে ধর্ষণের ঘটনা ততটা না বাড়লেও, ২০১২ সালের পর থেকেই তা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। বড় লাফটা শুরু হয় ২০১৩ সালে। ২০১২ সালে যে সংখ্যাটা ছিল ২৫ হাজারের কাছাকাছি, এক বছরের মধ্যেই (২০১৩) তা ৩৫ হাজার পেরিয়ে যায়। আর ২০১৬-য় তা পৌঁছে যায় ৪০ হাজারের কাছাকাছি। তবে ধর্ষণের শিকার বেশি হচ্ছেন ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে থাকা কিশোরী ও যুবতীরা। সেই হার ৪০ শতাংশেরও বেশি।
এনসিআরবি-র তথ্য এও বলছে, ২০১২ সালে ধর্ষণের যতগুলি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল তার ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে শাস্তি হয়েছিল অপরাধীদের। নির্ভয়া কা-ের জেরে ধর্ষণ আইন কঠোরতর ও অসংখ্য ফাস্ট ট্র্যাক আদালত চালুর ৫ বছর পর, ২০১৬ সালেও ধর্ষণের ঘটনায় শাস্তির হার সেই ২৫ শতাংশই থেকে গিয়েছে।
এনসিআরবি’র পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এ ব্যাপারে আদালতের ছবিটাও আশাব্যঞ্জক নয়। ২০১২ সালে দেশের আদালতগুলিতে দীর্ঘ দিন ধরে আটকে থাকা মামলার সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ। আর ৫ বছর পর, ২০১৬ সালে সেই সংখ্যাটা পৌঁছেছে ১ লক্ষ ৩৩ হাজারে। আনন্দবাজার।