চীনের সঙ্গে পাঁচটি খাতে সহযোগিতা রয়েছে গোলটেবিল আলোচনায় বললেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সাউথএশিয়ান মনিটর : নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গিয়াওয়ালি বলেছেন জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য চীনা সমর্থন এবং সহযোগিতার উপর ভরসা করে নেপাল। বেইজিংয়ে চায়না রিফর্ম ফোরাম আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় তিনি চীনা অংশীদারিত্বের উপর জোর দেন।
গিয়াওয়ালি বলেন, পরিবহন ও সংযোগ; কৃষি, শিল্প ও প্রযুক্তি হস্তান্তর; মানব সম্পদের বিকাশ; প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ; এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ – এই পাঁচটি মূল খাতে নেপাল ও চীন একসঙ্গে কাজ করতে পারে। চীনের সঙ্গে রেল, সড়ক, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ এবং বিমান যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়টি নেপাল সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে।
বুধবার চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে বৈঠকে যে বিষয়ে একমত হয়েছেন, সেটির উপর জোর দিয়ে মন্ত্রী গিয়াওয়ালি বলেন, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা বাণিজ্য, ব্যবসা এবং দুই দেশের জনগণের পর্যায়ে যোগাযোগকে সীমিত করে রেখেছে। সেটি কাটিয়ে ওঠার জন্য দীর্ঘমেয়াদে ট্রান্স-হিমালয়ান বহুমুখি পরিবহন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে।
২০১৫ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরপরই চীন যে তড়িৎ সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এসেছিল, সেজন্য গোলটেবিলে চীনের প্রশংসা করেন গিয়াওয়ালি। চীনা একটি প্রবাদ আওড়ে তিনি বলেন, চীন নেপালের প্রকৃত বন্ধু। চীনা প্রবাদের ভাষান্তর করে গিয়াওয়ালি বলেন, ‘শীত প্রচ- রকম বাড়লেই কেবল আমরা বুঝতে পারি যে পাইন আর সাইপ্রাস শেষাবধি মাথা উঁচু করে থাকে, আর যখন আমরা সমস্যাই পড়ি, তখনই কেবল আমরা বুঝতে পারি কে প্রকৃত বন্ধু।’
প্রাকৃতিক ও মানব-সৃষ্ট সকল সঙ্কটেই নেপালের প্রতি চীনের সহায়তা এবং নেপালের সার্বভৌমত্ব এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিকে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাওয়ায় চীনের প্রশংসা করেন তিনি। গিয়াওয়ালি ওই অনুষ্ঠানে বলেন, ‘নেপাল যেহেতু ২০২২ সালের মধ্যে এলডিসি (লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রি) পর্যায় থেকে বেরিয়ে আসবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে, আমাদের তাই আরও গতিতে ভিশন নিয়ে এগুনো উচিত। নেপাল ও চীনের মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা গেলে এইসব লক্ষ্য দ্রুত ও স্থায়ীভাবে অর্জন করা সম্ভব হবে।’
বুধবার গিয়াওয়ালি নেপাল-চীন সেলস মিশনেও বক্তৃতা করেন। এটা একটা পর্যটন কেন্দ্রীক কর্মসূচি যৌথভাবে যেটার আয়োজন করে নেপাল দূতাবাস, নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড এবং নেপাল অ্যাসোসিয়েশান অব ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্টস। গিয়াওয়ালি বলেন, পর্যটন নিয়ে সারা বিশ্বেই নেপালের প্রচারণা চালানো উচিত, কিন্তু সবচেয়ে বেশি উচিত প্রতিবেশী দেশগুলোতে যেখানে বিশাল অনাবিষ্কৃত বাজার রয়ে গেছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে চীনা পর্যটকরা নেপালে খুব সামান্য সংখ্যায় যান যেখানে ২০১৭ সালে দেশের বাইরে যাওয়া চীনা পর্যটকের সংখ্যা ছিল ১৩০ মিলিয়নেরও বেশি।