গরিব মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বরাদ্দ গত ১০ বছর বাড়েনি
বিশ্বজিৎ দত্ত: গরীব মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা গত ১০ বছরেও বাড়েনি। ২০০৮ সালে গরিবের জন্য বাজেটে বরাদ্দ ছিল মোট জিডিপির ২ শতাংশ। ২০১৮ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে। গবেষণা সংস্থা সিপিডি মনে করে এই দীর্ঘ সময়ে দেশে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু গরিব মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দ তুলনামূলকভাবে কমে গেছে।
সিপিডির অর্থনীতিবিদ তৌফিকুল ইসলাম খান জানান, গত কয়েক বছর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা খাতের সঙ্গে পেনশনকে যুক্ত করা হয়েছে। পেনশন যদি বাদ দেয়া হয় তবে গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দ খুবই কম। ২০১৮ সালের বাজেটে পেনশনারদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট বরাদ্দের প্রায় ৪২ শতাংশ। অর্থাৎ এই সময়ে বাজেটে পেনশনারদের প্রতি বছর মাথাপিছু গড়ে টাকা দেয়া হয়েছে, ৩৫ হাজার ৭৭০ টাকা। অন্যদিকে গরিব মানুষদের দেয়া হয়েছে মাথাপিছু ৫১৩ টাকা। এ বিষয়ে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্তি সচিব আলী নূর জানান, আগামী বছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতায় বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা আরো ৪ লাখ বৃদ্ধি করে ৩৯ লাখে উন্নীত করা হবে। বর্তমানে ৩৫ লাখ ব্যক্তিকে বছরে ২ হাজার ১শ কোটি টাকা বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রতি বছরই ভাতা ভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি মাসে ৫শ টাকা হারে এই ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে। বয়স্ক জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবার ও সমাজে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং চিকিৎসা ও পুষ্টি সরবরাহ বৃদ্ধি করে তাদের মনোবলকে জোরদারকরণের লক্ষ্যে সরকার এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট ও ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব সাঈদা নাইম জাহান জানান, ১৯৯৭-৯৮ সালে এই কর্মসূচি যখন চালু করা হয় তখন ছিল মাত্র ৪ লাখ ৩০ হাজার। আর বর্তমানে এই সংখ্যা হচ্ছে ৩৫ লাখ। তিনি বলেন, ২০৫০ সালের দিকে এদেশের ২০ শতাংশ নাগরিক প্রবীণ হবেন এবং শিশুসংখ্যা হবে ১৯ শতাংশ।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, শুধু সামাজিক নিরাপত্তা নয় শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতেও সরকারের বরাদ্দ ধারাবহিকভাবে কমেছে। আগামী বাজেটে শুধুমাত্র গরিব মানুষের উন্নয়নে বর্তমানের চেয়ে জিডিপির ১ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে। তাছাড়া সরকারের সামজিক নিরাপত্তার কোন কোন ক্ষেত্রে সরকার কত ব্যয় করছে তাও সুস্পষ্ট করতে হবে।