ভরা মৌসুমেও তিতাসে পানি নেই
তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
তিতাস নদীকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শিল্প-সাহিত্য, ব্যবস্থা-ব্যাণিজ্য গড়ে উঠেছিল। অদ্বৈত মল্ল বর্মণের কালজয়ী সেই উপন্যাসের এই বর্ণনার তিতাস এখন শুধুই ইতিহাস, শুধুই স্মৃতি। সেই তিতাস এখন আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না।
বিভিন্ন সূত্রের তথ্যানুযায়ী, তিতাস একসময় কালীদাহ সায়র (সাগর) নামে পরিচিত ছিল। পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বেষ্টিত এই তিতাস। জেলা সদর, নবীনগর, আশুগঞ্জ, সরাইল, নাসিরনগর, আখাউড়া, বিজয়নগর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে তিতাস নদ। সরাইলের বোমালিয়া খাল দিয়ে এসে নবীনগরের চিত্রি গ্রাম দিয়ে মেঘনায় মিলেছে তিতাস। নদীর দুপাড় অবৈধ দখলদারদের ইটভাটা, বয়লার আর শহরতলীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর পাড় দখল করে অবৈধ স্হাপনা তৈরি করে তিতাসের পরিসর দিনে দিনে ছোট হয়ে আসছে। বর্ষা মৌসুমেও পানির ¯্রােত না থাকায় আগের মতো জেলেরা আর মাছ পায় না। দখলবাজদের কবলে পড়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুর, মজলিশপুর, বাকাইল, শহরের পূর্বমেড্ডা, পাইকপাড়া, আনন্দবাজার, টানবাজার ও শিমরাইলকান্দি এলাকায় পাড় ভরাট করে গড়ে উঠেছে স্থায়ী অবৈধ স্থাপনা। নাব্যতা হারানোর ফলে কৃষি জমিতে সেচকাজে বিঘœ ঘটছে।
আর ময়লা-আবর্জনা ফেলে তিতাসপারের পরিবেশ বিষিয়ে তোলা হয়েছে। এসব দখল-দূষণের কারণে বিভিন্ন স্থানে সংকীর্ণ হয়ে এসেছে তিতাসের গতিপথ। পানি উন্নয়ন বিভাগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, তিতাস নদীর সব মিলিয়ে প্রায় ১০৩ কিলোমিটার খননের জন্য ১১৯ কোটি টাকা চুক্তিমূল্য হয়েছে। চলতি বছরে ৩০কিলোমিটার মাঝে ইতোমধ্যে ২২কিলোমিটার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে খননকাজ সম্পন্ন হবে। সম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর তিতাস তার পুরানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে পাবে। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান