নিরাপদে থাকা-খাওয়ার সুযোগে বিপন্ন শকুনের অবস্থার উন্নতি
মতিনুজ্জামান মিটু: নিরাপদে থাকা ও খাওয়াসহ নানা সুবিধা পাওয়ায় বাংলাদেশে ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছে মহাবিপন্ন শকুনের অবস্থা। আগের তুলনায় নিরাপদে থাকায় গত শীতের শেষে ৬টি বাচ্চা দিয়েছে নিরাপদ-১ এলাকায় ( হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার রেমা কালেঙ্গা নিরাপদ এলাকার ময়না বিল) বসবাসকারী বাংলা শকুনেরা। কিটোগ্রোফেন ও ডাইক্লোফেনাকসহ ব্যথানাশক মেশানো খাবার খেয়ে এবং খাবারের অভাবসহ নানা প্রতিকুলতায় গত ২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ প্রায় শকুন শূন্য হয়ে পড়ে। এই অবস্থা মোকাবেলায় সরকার বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ( সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে’২০১২ এর ধারা২০(১) এর ক্ষমতাবলে মহাবিপন্ন শকুন সংরক্ষণ ও বংশ বাড়াতে শকুনের নিরাপদ এলাকা-১ এবং শকুনের নিরাপদ এলাকা-২ ঘোষণা করে। সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, ব্রাম্মনবাড়িয়া, নরসিংদী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ি নিয়ে নিরাপদ-১ এবং ফরিদপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, মাদারীপুর, যশোর, গোপালগঞ্জ(টুঙ্গিপাড়া ব্যতীত), নড়াইল, শরিয়তপুর, বরিশাল, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষিরা, পিরোজপুর(ভান্ডারিয়া ব্যতিত), ঝালকাঠি, পটুয়াখালি ও বরগুণাকে নিয়ে নিরাপদ-২ এলাকা ঘোষণা করা হয়। নিরাপদ-১ এলাকার আয়তন ১৯,৬৬৩ দশমিক ১৮ বর্গকিলোমিটার এবং নিরাপদ-২ এ ২৭,৭১৭ দশমিক ২৬ বর্গকিলো মিটার। বন অধিদফতরের বন্য ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সার্কেল এর বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবির বলেন, সিলেটের রেমা কালেংগাতে ১৫০ থেকে ২০০টি এবং খুলনার দাকবের সুন্দরবনের পাশে ৩০ থেকে ৩৫টি বাংলা শকুন আছে। এছাড়া শীতে হিমালয় থেকে গ্রীথিন ও এসলেনডারবিল নামের শকুন এসে এদেশে কয়েক মাস থেকে চলে যায়। রেমা কালেংঘাতে প্রাকৃতিকভাবে শকুনের প্রজনন হচ্ছে। শকুন বছরে একটি ডিম দিয়ে থাকে। আবার প্রতি বছরে ডিম নাও পাড়তে পারে। শকুনের নিরাপদ এলাকার পাশাপাশি নিরাপদ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এব্যাপারে জাতীয়, জেলা, উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে গঠিত হয়েছে শকুন সংরক্ষণ কমিটি। এছাড়া সরকারের নানা উদ্যোগে শকুনের পরিস্থিতি বাংলাদেশে আগের চেয়ে ভাল হচ্ছে। মানুষও এব্যাপারে চেতনতার সঙ্গে এগিয়ে আসছে। সম্পাদনা: আনিস রহমান