ধারির গ্রাম সোহাগী
নীলকন্ঠ মজুমদার, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) : কৃষি প্রধান বাংলাদেশের ধান কাটার পর ও অন্যান্য ফসল রোদে শুকানোর প্রধান উপকরণ হচ্ছে ধারি। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের ভালকাপুর, শুনিয়াকান্দি, বারইগ্রাম, বগাপুতা, বৃ-কাঠালিয়া ও কাঠালিয়া গ্রামের প্রায় প্রতি বাড়িতেই বানানো হয় ধারি। আর এসব ধারি প্রতি বৃহস্পতি ও রোববার উঠানো হয় সোহাগী রেল স্টেশন বাজারে। এ অঞ্চলে পুরুষের পাশাপশি মেয়েরাও সমানতালে অংশগ্রহণ করছে ধারি তৈরির কাজে। পোনামতি ও মরাল বাঁশের গিট নরম হওয়ায় এসব বাঁশ থেকে বেতা তুলে ধারি বুনন করা হয়। মাঝারি একটি ১শত টাকা মূল্যেরবাঁশ থেকে ৪-৩ হাতের চারটি ধারি তৈরি করা সম্ভব বলে জানান উৎপাদকরা। দেখতে একরকম হলেও জোড়া বেতা দিয়ে বুনা হলে তাকে ধারি আর এক বেতা দিয়ে বুনা হলে তাকে বলা হয় চারি। ধারি চারির চেয়ে একটু শক্তও মানে ভালো হওয়ায় দাম একটু বেশি। বাজারের পাইকার তোতা মিয়া (৬৫) জানান, মৌসুমের প্রতি বাজারে সর্বনি¤œ ২শ বান্ডেল ধারি বাজারে আসে। যার প্রতি বান্ডেলের আনুমানিক মূল্য ১২ হাজার টাকা। বছরের তিনমাস ফাল্গুন, চৈত্র ও বৈশাখ মাসে বোরো ধান উঠার পূর্ব মুহূর্তে ধারির ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠে। ধারি পার্শ্ববর্তী ভাটি অঞ্চলের পাইকাররা কিনে রেলের মাধ্যমে নিয়ে যায়। আড়ৎদার আ. রাশিদ (৬৩) বলেন, স্থানীয় ভাবে বাঁশের যোগান কমতে থাকায় অন্যান্য এলাকা থেকে বাঁশ আনার কারণে ধারির উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
কিন্তু কোনো প্রকার ব্যাংক ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না। ধারি ছাড়াও ডোলা, চালুনি, ওইন্না ( মাছ ধরার উপকরণ) হাত পাখা, ঘরের সিলিং, ঘরের বেড়াসহ বিভিন্ন নিত্যব্যবহার্য জিনিষপত্র উপৎপাদিত হচ্ছে এখানে বাঁশ দিয়ে। তাদের দাবি, সরকারের সহযোগিতা পেলে এ শিল্পটি আরো সমৃদ্ধ হবে। সম্পাদনা :মুরাদ হাসান