৩০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহ নির্মাণ ঋণ পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা
সোহেল রহমান: সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহঋণ প্রদানের বিষয়টি এখন চূড়ান্ত হওয়ার পথে। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা, ২০১৮’-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থসচিব ‘আমাদের অর্থনীতি’-কে বলেন, ‘প্রস্তাবিত নীতিমালার আওতায় সরকারি চাকরিজীবীরা সর্বনি¤œ ৩০ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহ নির্মাণ ঋণ পাবেন। প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনসহ সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে এই ঋণ প্রদান করা হবে। এর আওতা পরে বাড়ানো হতে পারে। গ্রাহক ও ব্যাংকের সমঝোতার মাধ্যমে ব্যাংক এই ঋণ প্রদান করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈঠকে গৃহীত এই সিদ্ধান্ত অর্থমন্ত্রীর অনুমোদনের পর এটি মন্ত্রিসভায় যাবে।’
জানা যায়, আগামী অর্থবছর থেকে (০১ জুলাই ২০১৮) এটি কার্যকর করা হতে পারে। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য গৃহ নির্মান ঋণের সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ শতাংশ। এর মধ্যে সরকার ৫ শতাংশ এবং ঋণ গ্রহীতা বাকি ৫ শতাংশ সুদ পরিশোধ করবেন। অর্থাৎ সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মাত্র ৫ শতাংশ সুদে গৃহ নির্মান ঋণ চালু হতে যাচ্ছে। ২০ বছর মেয়াদে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
নতুন নীতিমালার আওতায় সরকারের প্রায় ১২ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী গৃহনির্মাণ ঋণের সুবিধা নিতে পারবেন। এককভাবে এই ঋণ সুবিধা নেওয়ার পাশাপাশি নীতিমালায় আবাসিক বাড়ি করার জন্য গ্রুপভিত্তিক ঋণও নেওয়া যাবে। ফ্ল্যাট কেনার জন্যও এই ঋণ সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে সেটা হতে হবে সম্পূর্ণ তৈরি ফ্ল্যাট।
সূত্র জানায়, নীতিমালার আওতায় উপ-সচিব থেকে সচিব পদমর্যাদা বা জাতীয় বেতন স্কেলের পঞ্চম থেকে প্রথম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তারা ২০ বছর মেয়াদে এই ঋণ নিয়ে বাড়ি নির্মাণ কিংবা ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন। তবে সর্বনিম্ন ১৮ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পাবেন। চাকরি স্থায়ী হওয়ার ৫ বছর পর থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা এই ঋণ নিতে পারবেন। সর্বোচ্চ ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত এই ঋণ নেওয়া যাবে।
ঋণের সর্বোচ্চ সিলিং নির্ধারণ সম্পর্কে নীতিমালায় বলা হয়েছে, বেতন স্কেল অনুযায়ী সর্বোচ্চ যে সিলিং সরকার নির্ধারণ করে দেবে, সেটিও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের যথাযথ পদ্ধতিতে যে পরিমাণ ঋণ সুবিধা নির্ধারণ করবে, তার মধ্যে যেটি কম, সে পরিমাণ ঋণ পাবেন। ফ্ল্যাট কেনা বা নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়ার জন্য ডেট ইক্যুইটি রেশিও হবে ৯০ঃ১০। অর্থাৎ ফ্ল্যাট কেনা বা নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণের জন্য কেউ নিজস্ব উদ্যোগে ১০ টাকা খরচ করলে তিনি ৯০ টাকা ঋণ পাবেন।