৫৯ ভাগ শ্রমিক অসন্তোষ ঘটে পোশাক শিল্পে অধিকাংশই বেতন ভাতা অধিকার নিয়ে
জাফর আহমদ: তৈরি পোশাক শিল্পে সব চেয়ে বেশি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে। আর এ অসন্তোষের অধিকাংশই ঘটে বেতন ভাতা ও শ্রমিকের আইনি অধিকারের বঞ্চনা থেকে। এ তথ্য প্রকাশ করেছে জানিয়েছে শ্রম বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনিস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ। ২০১৭ সালে সারা দেশের শ্রম পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
তৈরি পোশাক শিল্পে বঞ্চনা বেশি। শ্রমিকরাও তুলনামূলক বেশি সচেতন। এ কারণে তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ বেশি বলে মনে করেন এ শিল্পের শ্রমিকরা। তাদের মতে, মালিকরা মুনাফার জন্য যতটা যতœশীল শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে ঠিক ততটাই উদাসিন। এ কারণে তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ বেশি। ইনিস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের গবেষণার তথ্যে দেখা যায়, ২০১৭ সালে ১৮১টি শ্রম অসন্তোষের ঘটে। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ তৈরি পোশাক শিল্পে, ২৩ শতাংশ পরিবহন খাতে, বিড়ি কারখানায় ৫ শতাংশ, কৃষি খাতে ৪ শতাংশ এবং চা শিল্প, চিনিকল ও নৌপরিবহন খাতে ৩ শতাংশ করে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। এ সব অসন্তোষের ৪০ শতাংশই বেতন ভাতা কেন্দ্রিক। এছাড়া ২৫ শতাংশ শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে আইনি অধিকার ও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পূরণে মালিক পক্ষের অস্বীকারের কারণে।
এ ছাড়া কারখানা বন্ধ, শ্রমিককে মারধর, শ্রমিক নির্যাতন, ভারটাইমের টাকা না দেওয়া ও ক্ষতিপূরণের টাকা না দেওয়ার কারণে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (জিটিইউসি) সভাপতি এ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ বলেন, শ্রমিকের মজুরির বিষয়টি প্রধান। এ ক্ষেত্রেই শ্রমিকরা বঞ্চনার শিকার হয় বেশি। আর এই বেতনের কথা বলতে গিয়েই তাদের সংকটের কথাগুলো বলে। বেতন সময় মত না দেওয়া, যখন তখন যাকে তাকে বের করে দেওয়া, মাস্তান দিয়ে ভয় দেখানো-এ সব হলো শ্রমিককের প্রধান সমস্যা।
তৈরি পোশাক শিল্পে বেশি সমস্যার কারণ হলো এ শিল্পে শ্রমিকরা সচেতনতা ও ট্রেড ইউনিয়ন সম্পর্কে কথা বলা। এ কারণে তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা বেশি ঘটছে বলে মনে করেন এই শ্রমিক নেতা। তিনি বলেন, অন্যান্য খাতের শ্রমিকরা মুখ বন্ধ করে মালিকের নির্যাতন সহ্য করে বলে অন্যান্য খাতের শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনাও কম।