বিশ্ববিদ্যালয় ধারণাটি মুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত, বলপ্রয়োগের সঙ্গে নয়
আবদুল্লাহ মাহমুদ মোজাহিদ
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ফেসবুকে লিখেছেন, নামতে নামতে কোথায় যে নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শ্রেণির শিক্ষকেরা। ভাঙতে ভাঙতে হয়ে গেছে, মেরুদ-হীন বাকি অনেক শিক্ষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দু’হাজার শিক্ষক রয়েছে তার মধ্যে কতজনকে প্রতিবাদ করতে দেখেছেন কোটাসংস্কার আন্দোলনের ওপর পুলিশ। ঢা.বি. প্রশাসন আর ছাত্রলীগের নানামুখী আক্রমণের? অথচ আমরা নাকি জাতির বিবেক। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতার শিক্ষক অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন অবশ্য বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন একটু অন্যভাবে। ফেসবুকেই তিনি লিখেছেন, আমি ভাবছিলাম ভিন্ন কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন পরীক্ষা করছে হল প্রশাসন। ব্যক্তিগত পরিসর বলে তো একটা জিনিস আছে ।
সেখানে ধরে ধরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মোবাইল চেক । হল প্রশাসন তো দূরের কথা মা-বাবাও এমনটা করতে পারেন না। হল প্রশাসন কতটা ক্ষমতার চর্চা করলে এমনভাবে ব্যক্তিগত পরিসর লঙ্ঘন করতে পারে । কারো পোস্ট ক্ষতিকর মনে হলে সেটার ব্যবস্থা নেয়ার আইনি পথ আছে। ব্যক্তিগতভাবে কারো মোবাইল ফোন পরীক্ষা করার অধিকার হল প্রশাসনের থাকতে পারে কি? ভেবেছিলাম, মেয়েরা যত বড়ই হোক, তাদের মোবাইল ফোন চেক করা, মা-বাবাকে ডেকে রাত-বিরাতে তাদের হাতে তুলে দেয়ার মতো কাজ আজও ঘটতে পারে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কৌতূহল থেকে ভাবছি, ছেলেদের হলে কোনো ছেলের মোবাইলও কি এভাবে পরীক্ষা করতে পারতো হল প্রশাসন। তারপর তাদের মা-বাবাকে ডেকে তাদের হাতে তুলে দিতে। আমার ধারণা, এমন কথা মাথাতেই আনা সম্ভব হতো না। মেয়েদের ব্যক্তিগত পরিসরে হানা দেয়ার সাহস যে কেউ যেকোনো জায়গায় করতে পারেন বোধহয়। সেই হানা দেয়ার কথা ফলাও করে বলাও যায় । শিক্ষার্থী হল কোনো কন্সেট্রেশন ক্যাম্প নয়। বিশ্ববিদ্যালয় ধারণাটি মুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত, বলপ্রয়োগের সঙ্গে নয়।
পরিচিতি : ছাত্র, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় /মতামত গ্রহণ : নৌশিন আহম্মেদ মনিরা /সম্পাদনা : রাশিদুল ইসলাম মাহিন