শ্রমিক সংকটে দিশেহারা ঈশ্বরগঞ্জের চাষিরা
নীলকন্ঠ আইচ,ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): সোনালী ধানের সোনালী স্বপ্ন চোখের জলে বিলীন হচ্ছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের কৃষকদের। ধান কাটায় শ্রমিক সংকট ও বৈশাখ মাসে বর্ষা নেমে আসায় ঠিকমতো বোরো ধান ঘরে তুলতে না পারায় ঈশ্বরগঞ্জের কৃষকরা হাতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার হলেও শ্রমিকের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। কৃষিপ্রধান দেশে শিল্পায়নের ফলে কৃষি শ্রমিকরা ঝুঁকে পড়ছে কলকারখানায়। বাংলাদেশে ময়মনসিংহ জেলা ধানভা-ার হিসেবে খ্যাত। এর ধারাবাহিকতায় ঈশ্বরগঞ্জেও প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদিত হয়ে থাকে। মূলত অধিক লাভের আশায় অধিক উৎপাদনের বোরো আবাদ করে থাকে কৃষকরা। তবে সার বীজ সেচ পরিচর্যা ও ধান কাটায় অধিক ব্যয় করতে হয় বোরো আবাদে। এ বছর বৈশাখ মাসে অধিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে সঠিকভাবে ধান সংগ্রহ ও মাড়াই করতে পারছে না কৃষকরা। নিচু জমিগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় অনেক ধান পানির নিচে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। কষ্ট করে অনেকে ধান কাটার পর রৌদ্রের অভাবে ধান শুকাতে না পারার ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ধান । অন্যদিকে ধানের ন্যাড়া না শুকাতে পারার ফলে দেখা দিচ্ছে গোখাদ্য সংকট। শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি রয়েছে শ্রমিকের অধিক মজুরি। প্রতি শ্রমিককে দিনে ৫শ- ৬শ টাকা ও সাথে দুবেলা খাবার। এরপর রয়েছে ধান মাড়াই যা থেকে কল মালিকরা নিয়ে যাচ্ছে ১৪ ভাগের ১ ভাগ। তারপরও পাওয়া যাচ্ছে না শ্রমিকের নাগাল। বাজারে মণপ্রতি ৬শ-৭শ টাকা দরে বাধ্য হয়ে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে শ্রমিকদের মজুরি ও মহাজনের দেনা পরিশোধ করার জন্য। ফলে ন্যায্য দাম থেকে যেমনি বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক তেমনি বাড়ছে লোকসানের বোঝা।
বৎসরে আউশ আমন ও বোরো তিনবার তিন ধরনের ধান উৎপাদন হলেও বোরো ধান উৎপাদনে কৃষকের আগ্রহ বেশি। একসময় ধানের বিভিন্ন উপকরণের অপর্যাপ্ততা থাকলেও বর্তমান সময়ে তা পরিলক্ষিত হচ্ছে না । কিন্তু কৃষক তার উৎপাদিত ধানের সঠিক দাম পাচ্ছে না । যার ফলে ধান উৎপাদনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অনেক কৃষক। উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন (৪৪) জানান, ধান চাষে কোন প্রকার লাভ নেই শুধুমাত্র জমি আছে তাই চাষ করি। ধানের সঠিক মূল্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করে কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখতে সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান