‘ওআইসিসহ কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে’ রোহিঙ্গা বিষয়ে মিয়ানমার নমনীয়
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: সম্প্রতি নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সরেজমিন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং জাতিসংঘের চাপের পর মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে অনেকটাই নমনীয়। দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সুচিও গত মঙ্গলবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাস্তব সম্মত সমাধানের কথা বলেছেন। এই পরিস্থিতিতে আগামী কাল থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে দুদিনের ওআইসি সম্মেলন। এই সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলোর কাছ থেকে ঘোষণা একটি সুনির্দিষ্ট ঘোষণার বিষয়ে প্রস্তাব তুলে ধরার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, মিয়ানমারের এই নমনীয় অবস্থানকে কাজে লাগাতে হবে। রোহিঙ্গা বিষয়ে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরো বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সহযোগিতা ও বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন আদায়ের উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে যাওয়ার পর রোহিঙ্গা বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চুপ প্রভাবশালী দেশ ভারত, চীন ও রাশিয়া কথা বলতে শুরু করেছে। আবার শনিবার দেশে আসছে ৫৭টি মুসলিম দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।
মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) অনুপ কুমার চাকমা বলেন, আন্তর্জাতিক চাপ অব্যহত থাকার ফলে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন নিয়ে নতুন করে ভাবছে। অং সান সুচি বলেছেন বাস্তব সম্মত সমাধানের কথা। তার মানে তারা এর আগে ওয়ার্র্কি গ্রুপের মাধ্যমে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের শর্তগুলো যে বাস্তবসম্মত ছিলো না, সেটি সুচির এই বক্তব্যের মধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক চাপে আবার যেনো সময় ক্ষেপনের সুযোগ না পারে দেশটির সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
মিয়ানমারে বাংলাদেশের আরেক সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর (অব.) ইমদাদুল ইসলাম বলেন, ওআইসি সম্মেলনে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা বিষয়ে মুসলিম বিশ্বকে এক কাতারে আনতে হবে। মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরো বাড়াতে হবে। এখন আর নীরব কূটনীতির আশ্রয় নিলে হবে না, সরব কূটনীতি চালাতে হবে। মনে রাখতে হবে মিয়ানমার এর আগেও চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ও রোহিঙ্গা গবেষক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, ওআইসি সম্মেলনে রোহিঙ্গা বিষয়ে বড় চাপ তৈরি করতে হবে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ। ৫৭ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আসবেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে যেনো একটি ঘোষণা আসে সে বিষয়ে আমাদের জোর দিতে হবে।