মোদি-শি আলোচনায় দূরে রাখা হয়েছে নেপালকে
আসিফুজ্জামান পৃথিল : ২৭-২৮ এপ্রিল মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে অনানুষ্ঠানিক সম্মেলনে অংশ নেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চীনা কর্তৃপক্ষ সম্মেলনের জন্য উহানকে হিসেব করেই বাছাই করেছে, যেন তেন ভাবে বাছাই করেনি।
পিপলস রিপাবলিক অব চায়নার প্রতিষ্ঠাতা মাও জেদং এখানেই ১৯৭২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। সেটা ছিল একটা ঐতিহাসিক বৈঠক যেখান থেকে মার্কিন-চীন বাণিজ্য সম্পর্কের নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল। এটা স্মরণ করা যেতে পারে যে মাওয়ের কমিউনিস্ট পার্টি তিব্বত দখল করে সেটাকে চীনের সাথে একীভূত করার পর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের এমনকি কথাবার্তাও বন্ধ ছিল।
১৯৭২ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৭ সালে এসে এই বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৩৬ বিলিয়ন ডলার। এখানে চীনের পক্ষে উদ্বৃত্ত রয়েছে ৩৬৭ বিলিয়ন ডলার। মোদি আর শি-কে এখন একটা বৈপরিত্যের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে, চীনা ভাষায় যেটাকে বলে ইন ইয়াং।
সিনো-ভারত সম্পর্কটা এখন চলছে বেশ কিছু অস্বাভাবিকতা এবং জাঁকজমকের মধ্য দিয়ে। কিছু সুযোগ সুবিধাও অবশ্য রয়েছে। ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য সহযোগী চীন। তাদের মধ্যে ২০১৭ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৮৮.৪৪ বিলিয়ন ডলার। যেখানে ভারতের রফতানি ১৬.৩৪ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে সীমিত। এই ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতি ভারতের জন্য নিশ্চিতভাবেই উদ্বেগের বিষয়। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো, দক্ষিণ এশিয় উপমহাদেশে বিশেষ করে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পের মাধ্যমে চীনের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাব বাড়তে থাকায় সেটাও ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে যে এলাকাটাকে ভারত নিজের প্রভাব বলয়ের অংশ ভেবে এসেছে। ভুটান-ভারত-চীনের ত্রিদেশীয় সংযোগ পয়েন্টের দোকলামে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মুখোমুখি অবস্থান এবং ভারতের প্রধান শত্রু পাকিস্তানের সাথে চীনের খোলামেলা বন্ধুত্ব যেটার কারণে উচ্চাকাক্সক্ষী ৬৬ বিলিয়ন ডলারের চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর হচ্ছে, এগুলো ভারতের জন্য নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর পরও ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং প্রেসিডেন্ট শি গত চার বছরে প্রায় এক ডজন বৈঠক করেছেন। উভয়েই একে অন্যের দেশে আনুষ্ঠানিক সফর করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও ফোরামের বৈঠকের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন তারা। দুই দেশই ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা) ক্লাব ও সাংহাই কোঅপারেশান অর্গানাইজেশানসহ আরও বেশ কিছু ফোরামের সদস্য। সাউথ এশিয়ান মনিটর