শক্তিমান চাকমা আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলো
প্রভাষ আমিন
পাহাড়ে শান্তি বলতে নেই বললেই চলে। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি রক্ষা আইন হওয়ার পর আমরা আশা করছিলাম যে, পাহাড়ে শান্তি আসবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পাহাড়ে শান্তি আসেনি। পাহাড়ে ইতিপূর্বে সংগঠন ছিলো একটি। যার সাথে সরকার চুক্তি করেছে। এখন সেই পাহাড়ে সংগঠন হয়েছে মোট চারটা। এখন যে সংগঠনগুলো তৈরি হচ্ছে তাদের মধ্যে একটা অন্তর্কোন্দল বিরাজমান আছে। ফলে এটা খুবই বেদনাদায়ক ঘটনার জন্ম দেয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের যে নান্দনিক সৌর্ন্দয্য বা মানুষের যে বৈচিত্র তা কিন্ত খুবই অতুলনীয়। কেননা, সেখানে বাঙালি আছে, পাহাড়ি আছে, চাকমা আছে, মারমা আছে। এই বৈচিত্রটা কিন্তু মানুষের সভ্যতার সৌর্ন্দয্য। বাংলাদেশের মূল বৈচিত্রটা কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে আছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম মানুষের দিক থেকেও সুন্দর এবং প্রাকৃতিক দিক থেকেও সুন্দর এবং মনোরম। এই রক্তক্ষয়ী অন্তর্কোন্দলের জন্য পাহাড় বরাবরই অশান্ত ছিলো, যেটা আমরা দেখতেছি। পাহাড় কখনোই আমাদের জন্য ভালো কিছু হতে পারেনি বরং আমাদের জন্য এক ধরনের বোঝা হয়ে রয়েছে। পাহাড়ে যেই চারটা সংগঠন আছে, তাদের কারো না কারো মধ্যে অন্তর্কোন্দলীয় দ্বন্দ আছে, যার ফলে এরকম রক্তাক্ত পাহাড়ি এলাকা আমরা প্রায়ই দেখতে পারছি। উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমার হত্যাকান্ডে আমি খুবই মর্মাহত ও দুঃখ প্রকাশ করছি। শক্তিমান চাকমা আমার ব্যক্তিগতভাবে বন্ধু ছিলো। আমরা একসাথে কলেজে লেখাপড়া করেছি। শক্তিমান চাকমা আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলো । আমি মনে করি, পাহাড়িরা তাদের নিজেদের সম্পদ হিসেবে মনে করে নিজেদের মধ্যে এরকম রক্তারক্তি বন্ধ করা উচিত। যদি এরকম গোষ্ঠি দ্বন্দ চলতেই থাকে, তাহলে তারা কখনোই উন্নতির শিখরে পৌঁছাবে না। পাহাড়িদেরকেই আগে এগিয়ে আসা উচিত যে, তাদের নিজেদের সংঘাত নিজেরা মিটিয়ে ফেলবে। সরকারের সাথে যে দ্বন্দটা ছিলো, সেটা তো কিছুটা মিটেছে, পুরোটা না হলেও। আশা করি বাকিটাও মিটবে। তারা যদি নিজেরা নিজেদের সংঘাত না মিটায়, তাহলে এই সংঘাত কখনোই মিটবে না বলে আমি মনে করি।
পরিচিতি : হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ/ মতামত গ্রহণ : মো. এনামুল হক এনা / সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ