ড. হুমায়ুন আজাদ ছিলেন প্রথা বিরোধী ও বহুমাত্রিক মননশীল লেখক
অধ্যক্ষ ফরহাদ আজিজ
বহুমাত্রিক ও প্রথাবিরোধী লেখক প্রয়াত অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদের ৭২ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সম্প্রতি তাঁর জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা এবং লেখকের লেখা থেকে পাঠের আসর বসে তাঁর বাসস্থান সংলগ্ন জ্যোতির্ময় আঙ্গিনা’তে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ ছিলেন একজন প্রথা বিরোধী ও বহুমাত্রিক মননশীল লেখক। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৬০টিরও বেশী। তার জীবনের নানাদিক ওঠে আসে বক্তাদের কথায়। হুমায়ুন আজাদ ১৯৬২ সালে রাড়িখাল স্যার জেসি বোস ইনস্টিটিউশন থেকে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। বোর্ডে তার অবস্থান ছিল ২১তম। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৬০টিরও বেশী। আজাদের ১০টি কাব্যগ্রন্থ, ১৩টি উপন্যাস, ২২টি সমালোচনা গ্রন্থ, ৮টি কিশোর সাহিত্য, ৭টি ভাষা বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ রয়েছে। ১৯৯২ সালে নারীবাদী গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশ করে গোটা দেশে সাড়া তোলেন। বইটি ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৮৬ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান। ২০১২ সালে সামগ্রিক সাহিত্যকর্ম এবং ভাষাবিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য মরণোত্তর একুশে পদক পান। তাঁর রচিত কিশোর সাহিত্য ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত আব্বুকে মনে পড়ে জাপানী ভাষায় অনূদিত হয়েছে ২০০৩ সালে। ১৯৪৭ সালে ২৮ এপ্রিল নানা বাড়ী কামারগাঁও গ্রামে জন্ম। তখন নানা বাড়ীতে জন্ম নেয়াটাই রীতি ছিল। তাঁর পৈত্রিক বাড়ী পাশর্^বর্তী রাড়িখাল গ্রামে। রাড়িখাল পূর্ব ও পশ্চিমে লম্বা একটি সূর্যদীঘল গ্রাম। কিন্তু শ্রীনগর থেকে ভাগ্যকুল পর্যন্ত রাস্তাটি গ্রামটিকে দুইভাগ করে দেয়। বর্তমানে এটি ঢাকা দোহার রোড নামে পরিচিত। রাস্তার উত্তরের গ্রামটি উত্তর রাড়িখাল এবং দক্ষিণের গ্রামটি দক্ষিণ রাড়িখাল নামে পরিচিত। এই দক্ষিণ রাড়িখালেই তার পৈত্রিক নিবাস। বাড়িটি আখন্দ বাড়ি নামে পরিচিত। পিতার নাম আব্দুর রাশেদ, মাতা জোবেদা খাতুন। হুমায়ুন আজাদ পিতা-মাতার ২য় পুত্র ও ৩য় সন্তান। হুমায়ুন আজাদ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযু্িক্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, কবি এমদাদ খান, মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার, মাহমুদ হোসেন খান, অধ্যক্ষ মুজিবর রহমান বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন ড. হুমায়ুন আজাদের সহোদর অতিরিক্ত সচিব (অব:) সাজ্জাদ কবির।
লেখক : অধ্যক্ষ, রাড়িখাল স্যার জেসি বোস ইনস্টিটিউশন ও কলেজ/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ