সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বাজেটে ৮ দফা সংস্কার প্রস্তাব
সোহেল রহমান : জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানো ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়নে গতিশীলতা আনতে আসন্ন বাজেটে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ৮ দফা সংস্কার প্রস্তাব অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় প্রস্তাবিত এসব সংস্কার বাস্তবায়িত হলে সম্পদের খাতভিত্তিক বন্টনের দক্ষতা এবং আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা ও দক্ষতা বাড়বে। একই সঙ্গে চিহ্নিত জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় সহজে সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ৮ দফা সংস্কার প্রস্তাবগুলো হচেছÑ পেনশনারদের ডাটাবেইজ তৈরি এবং এর ভিত্তিতে ‘ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার’ (ইএফটি)-এর মাধ্যমে পেনশন প্রদান; সরকারি কর্মচারিদের ডাটাবেইজ প্রণয়ন এবং পাইলটিং ভিত্তিতে অন-লাইনে বেতন-বিল দাখিল কার্যক্রম চালু; ঘরে বসে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা দেওয়া এবং তা যাচাইয়ের জন্য ‘ই-চালান’ বাতায়ন চালু করা; সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টণীভুক্ত অর্ধ কোটি সুবিধাভোগীকে ‘জি-টু-পি’ পদ্ধতিতে ভাতা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ; ‘বাজেট ও হিসাব রক্ষণ শ্রেণী বিন্যাস পদ্ধতি’র আওতায় নতুন শ্রেণী বিস্যাস কোড চালু; ক্লাইমেট ফিসক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক-এর আওতায় রাজস্ব নীতি ও বাজেট কাঠামোকে জলবায়ু সংবেদনশীল করা; সঞ্চয়পত্র বিক্রয় ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনার জন্য ডাটাবেইজ তৈরি এবং ‘রইঅঝ ++’ নামক ইন্টারনেট ভিত্তিক কেন্দ্রীভূত ও অত্যাধুনিক সিস্টেম চালু করা।
সূত্রমতে, আগামী অর্থবছর থেকে সারাদেশে সকল সরকারি লেনদেন ‘রইঅঝ ++’-এর মাধ্যমে সংরক্ষিত হবে। এতে করে সরকারের লেনদেন ও নগদ অবস্থার তাৎক্ষণিক চিত্র পাওয়া যাবে। এটি সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় ঋণ গ্রহণ পরিহারে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
সূত্রমতে, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে সরকারি ব্যয় বিশেষত উন্নয়ন ব্যয়ের গতি কিছুটা ধীর। আলোচ্য সময়ে মোট সরকারি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। এটা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ। ব্যয়ের এই হার গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়ও কম। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই হার ছিল ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ।
অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) এডিপি ব্যয় দাঁড়িয়েছে মোট বরাদ্দের ৪৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এটা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
সরকারের নীতি নির্ধারকদের মতে, উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখতে হলে সরকারি ব্যয় বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমানে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলছে। এর ফলে আগামী অর্থবছরে উন্নয়ন ব্যয়সহ সার্বিক ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে বলে মনে করছে সরকার।