‘পার্বত্য অঞ্চলে শান্তিশৃঙ্খলা ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে অতিসত্বর অভিযান পরিচালনা জরুরি’
আশিক রহমান: পার্বত্য অঞ্চলে সহিংসতা বন্ধ, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে অতিসত্ত্বর সেখানে অভিযান পরিচালনা জরুরি বলে মনে করেন সাবেক সেনাপ্রধান ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম. হারুন-অর-রশিদ, বীরপ্রতীক। টেলিভিশন নিউজ এজেন্সির (টিভিএনএ) নিজস্ব স্টুডিওতে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পাহাড়ের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব বেসামরিক কর্তৃপক্ষের। তবে এখন যেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি তাতে বলতে পারি যে, ওখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। যদি এমনটি না হতো তাহলে তো এত খুনোখুনি হতো না। এ পরিস্থিতি আমাদের আয়ত্বে আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, একটা সময় শান্তিবাহিনী সীমান্তের বাইরে থেকে অস্ত্র যোগাড় বা সহযোগিতাটা আসত। কিন্তু আমরা যতটুকু জানি, বর্তমান ভারতীয় সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর। কোনো সমর্থন নেই তাদের প্রতি। এখন যাদের কাছে অস্ত্র আছে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা বা অস্ত্রগুলো নিয়ে নেওয়ার জন্য অতিসত্ত¦র সেখানে অভিযান পরিচালনা করা জরুরি, যেভাবেই হোক সেখানে অস্ত্রের যে সমাগম তা বন্ধ করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, পাহাড়ে যে শুধু এখনই অশান্তি হচ্ছে তা নয়, এর আগেও হয়েছিল। তবে পাহাড়ের এখনকার অশান্তির বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে। এর মধ্যে শান্তিচুক্তির পক্ষ ও বিপক্ষ। একসময় ছিল দুটি পার্টি। এখন দুই পার্টি চারটি হয়েছে। শান্তিচুক্তির পক্ষের পার্টি দুটি, বিপক্ষেও দুটি। তাদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব রয়েছে।
তিনি বলেন, পাহাড়ে যে সহিংসতা ও খুনোখুনি হচ্ছে তার কারণ নেতৃত্বের কোন্দল। আমরা কতগুলো সমস্যার সমাধান এখনো করতে পারিনি, যেটা শান্তিচুক্তিতে করার কথা ছিল। বিশেষ করে ভূমির মালিকানা। এই একটা সমস্যা যদি আমরা সমাধান করতে পারি তাহলে পার্বত্য অঞ্চলে বাকি সমস্যাগুলো অটোমেটিক্যালি নিভে যাবে।
তিনি আরও বলেন, পাহাড় থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হয়েছে তা সঠিক নয়। সেনাবাহিনী ছিল বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট ছোট ক্যাম্পে বিভক্ত, ক্যাম্প থেকে প্রত্যাহার করে এখন সেনানিবাসভিত্তিক করা হয়েছে। যে সমস্ত এলাকায় ডিক্লেয়ার করা হয়েছে ওখানে সেনানিবাস থাকবে সেই সেনানিবাসভিত্তিক করা হয়েছে। ওখানে এখন দুটি প্রশাসন। একটি সিভিল প্রশাসন, অন্যটি মিলিটারি প্রশাসন। শান্তিচুক্তির পর যেহেতু জরুরি অবস্থা নেই, সেনাবাহিনী এখন সহযোগির ভূমিকায় আছে। বেসামরিক শাসনব্যবস্থার সহযোগি ভূমিকায় আছে এখন সেনবাহিনী। বেসামরিক প্রশাসন বা কর্তৃপক্ষ যখন সামরিক বাহিনীর সহযোগিতা চাইবে তখন তারা সেই সহযোগিতা দিয়ে থাকে।