সরকার ভোটের ধার ধারে না: গয়েশ্বর
শরীফা খাতুন শিউলী, খুলনা : বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ দলীয় কর্মীদের ব্যবহার করে ফলাফল আয়ত্ব করতে পারলে সরকার খুলনায় বন্ধের প্রক্রিয়ায় যাবে না। মূলত জনগণ এবং ভোটারদের ওপর আস্থা নেই আওয়ামী লীগের। তারা ভোটেরও ধার ধারে না। ভোটাররা ভোট দিক আর না দিক, তাদের জিততেই হবেÑ এ ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে আওয়ামী লীগ খুলনায় নির্বাচন করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত দলীয় নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার, পুলিশের হয়রানি, ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক হামলা-মামলা, হুমকি-ধমকি এবং সর্বোপরি ধানের শীষের প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার অভিযোগ এনে এ প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
এসময় গয়েশ্বর বলেন, সরকার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বন্ধ করে আদালতের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেছে। খুলনা সিটিতেও একই ধরনের প্রক্রিয়া করে রেখেছে তারা।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কেসিসি নির্বাচন পরিচালনায় রিটার্নিং অফিসারই হচ্ছেন সর্বোচ্চ কর্মকর্তা। কিন্তু সরকারের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন একজন যুগ্ন সচিবকে খুলনায় পাঠিয়ে তাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এটা নির্বাচনি আচরণবিধি ও আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এর মধ্যদিয়েই নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়Ñ উল্লেখ করে তিনি জাতীয় নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, খুলনার নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নেই বলে স্বীকার করেছেন এইচটি ইমাম। তবে, তার বক্তব্য আওয়ামী লীগের জন্য প্রযোজ্য না হলেও বিএনপির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি মনোনীত কেসিসির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেন, খুলনায় এ পর্যন্ত বিএনপির ৯০ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে জেলায় ৫৫ এবং মহানগরীতে ৩৫ জন। গ্রেফতারকৃতরা সবাই নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ছিল। রাজনৈতিক মামলায় সবাই জামিনে রয়েছে। বর্তমানে কারো বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। অথচ পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে পুরনো মামলায় গ্রেফতার দেখাচ্ছে। একইসঙ্গে বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে। কর্মীরা নির্বাচনি মাঠে থাকতে পারছে না। অথচ শহরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ধরছে না।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদিন ফারুক, মশিউর রহমান, মো. শাজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু, শফিকুল আলম মনা, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, মীর কায়সেদ আলী, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, মোল্লা আবুল কাশেম, আমীর এজাজ খান, ফখরুল আলম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, মনিরুল হাসনা বাপ্পী প্রমুখ।