‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগান নিয়ে কক্ষপথে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১
হুমায়ুন কবির খোকন: ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগান নিয়ে কক্ষপথের দিকে ছুটছে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে বাংলায় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানটি লেখা রয়েছে। দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ কক্ষপথে পাঠানোর মাধ্যমে মহাকাশে যোগাযোগ উপগ্রহ পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের ৫৭তম দেশ।
বাংলাদেশ প্রত্যক্ষ করলো এক মাহেন্দ্রক্ষণ। আকাশ প্রযুক্তিতে ইতিহাস সৃষ্টি হলো। বাংলাদেশের ইতিহাসে যোগ হলো সাফল্যের আরেকটি মাইলফলক।
যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’-এর রকেটে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চ প্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করা হয়। গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্লোরিডায় উৎক্ষেপণ কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত ছিলেন। উৎক্ষেপণ স্থানে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম (সাবেক টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী), তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ৩০ সদস্যর প্রতিনিধি দল ফ্লোরিডায় রয়েছেন। তারানা হালিম বৃহস্পতিবার বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হয়ে আকাশপথে থাকবে। স্পেসএক্স এবারই প্রথম উপগ্রহ উৎক্ষেপণে তাদের ফ্যালকন-৯ রকেটের ব্লক ৫ সংস্করণ ব্যবহার করতে যাচ্ছে।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য বিদেশি স্যাটেলাইট ব্যবহার করায় যে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়, ‘বঙ্গবন্ধু-১’ স্যাটেলাইট চালু হলে তা বেঁচে যাবে। পাশাপাশি দেশের প্রথম এই কৃত্রিম উপগ্রহের বাড়তি সক্ষমতা ভাড়া দিয়ে বিদেশি মুদ্রা আয়ও হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সম্প্রচার, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। আমরা আমাদের দেশের সকল টিভি চ্যানেলের চাহিদা মিটিয়ে আমাদের স্যাটেলাইট অন্যান্য দেশের টিভি চ্যানেলের জন্য ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করতে পারবো। বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বা দুর্গম পাহাড়ী এলাকা যেখানে ফাইবার অপটিক দিয়ে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া কঠিন, সেসব জায়গায় স্যাটেলাইটের মাধ্যমে খুব সহজেই তা পৌঁছানো সম্ভব হবে। এর বাইরেও যোগাযোগ স্যাটেলাইট তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়। দুর্যোগের সময় ভূমিকেন্দ্রিক যোগযোগ ব্যবস্থা অকার্যকার থাকলেও স্যাটেলাইট তখন কার্যকর থাকে। শুধু তাই নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগে-পরেও স্যাটেলাইট যোগাযোগ খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এই উদ্যোগের জন্য প্রতিমন্ত্রী পলক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন।
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মেজবাহউজ্জামান বলেন, ফ্যালকন-৯ রকেট ৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন ওজনের বঙ্গবন্ধু-১ যোগাযোগ স্যাটেলাইটটি মহাকাশে নিয়ে যাবে। মহাকাশে নির্দিষ্ট স্লটে এটির পৌঁছাতে ৮ দিন সময় লাগবে।