আফগানিস্তানে শান্তির প্রশ্নে পাকিস্তানের ব্যাপারে নমনীয় হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
সাউথএশিয়ান মনিটর : আফগানিস্তানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বহুল প্রচারিত ‘আঞ্চলিক কৌশল’ দারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মার্কিন নীতি আফগান ইস্যুকে সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়েছে, যেখানে নিলে অন্যান্য দেশগুলোও মার্কিন নীতি অনুসরণ করা জরুরি মনে করতো। তালেবানদের আলোচনার টেবিলে বসার জন্য চাপ দেয়ার ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ হয়েছে। পাকিস্তানকে মার্কিন নীতির কাছে নতি স্বীকার করানোর জন্য চাপ দিয়েও ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে জিতিয়ে দেয়ার জন্য পাকিস্তানের উপর চাপ দিয়েছিল তারা, যে যুদ্ধ তারা নিজেরা ১৬ বছরেও জিততে পারেনি।
কয়েক মাসের শীতল আচরণের পর মনে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে শুরু করেছে যে পাকিস্তানকে দূরে ঠেলে দেয়ার ফল কি হতে পারে। তাই আবার তারা উষ্ণ হওয়ার চেষ্টা করছে। ভেতরের উত্তেজনা এখনও রয়ে গেলেও সম্প্রতি তারা আফগানিস্তানে পাকিস্তানের ভূমিকার উপর জোর দিচ্ছে। এতে মনে হচ্ছে যুদ্ধে পাকিস্তানকে নিজেদের পাশে রাখতে তাদের স্বার্থের ব্যপারটিও বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত সপ্তাহে আফগানিস্তান নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পেন্টাগনের প্রধান মুখপাত্র ডানা হোয়াইট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান শুধু একসাথে কাজই করতে পারে না বরং পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের শান্তির লক্ষ্য অর্জনে সাহায্যও করতে পারে, কারণ তাদের অনেক সুযোগ রয়েছে। হোয়াইট বলেন, ‘আমরা মনে করি পাকিস্তান আরও অনেক কিছু করতে পারে এবং আমরা আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে আরও এগিয়ে নিতে তাদের সাথে কাজের ক্ষেত্র খুঁজছি।’ পাকিস্তান আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য গভীরভাবে এবং অনিবার্যভাবে প্রাসঙ্গিক রয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ‘আরও বেশি কিছু করার’ অবস্থান থেকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ‘আরও বেশি করার’ বক্তব্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের যে পরিবর্তন, পাকিস্তানের জন্য অবশ্য সেটা একই সাথে সমস্যার, আবার গুরুত্বপূর্ণও বটে। পাকিস্তানের জন্য এটা সমস্যার, কারণ আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাদের শর্ত মেনে যুক্ত হলে সেটা হবে একটা কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ। কারণ পাকিস্তান এরইমধ্যে চীন ও রাশিয়ার সাথে শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এবং দর কষাকষি শুরুর জন্য পরোক্ষ কূটনৈতিক চ্যানেলে আলোচনাও শুরু হয়েছে।
আফগানিস্তান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার নীতি ভিন্ন – এই বিষয়টি বিবেচনায় নিলে পাকিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো: দুই নৌকায় পা দেয়ার মতো সফল কূটনীতি কি করতে পারবে পাকিস্তান? যেখানে নৌকা দুটো উল্টো দিকে চলছে। তাছাড়া একই সাথে ভূ-রাজনৈতিক দাবার ছকে দুই দিকে তাল মিলিয়ে তারা কি চলতে পারবে? সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ