গোপালগঞ্জে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, হাসপাতালে জায়গা নেই
এসএম সাব্বির, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে গত দুই সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে। এসব রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। সিট না দিতে পারায় বাধ্য হয়ে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় থাকতে হচ্ছে এসব রোগীদেরকে। অনেককে আবার রাখা হয়েছে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনের সেডে। গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার অন্য ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব রোগীদের সিট দিতে পারছে না। বাধ্য হয়ে তারা হাসপাতালের মেঝে, বারান্দা ও বাইরে সেডে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছে। অধিক রোগী আসার কারনে হাসপাতাল গুলোতে ডায়রিয়া রোগে ব্যবহৃত ওষুধ ও স্যালাইন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় ঔষধ সরবরাহ কম থাকায় বাধ্য হয়ে রোগী ও রোগীর স্বজনরা বাইরে থেকে ওষুধ কিনছে। গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৫টি বেড থাকলেও রোগী রয়েছে ৩৫জন। এ হাসপাতালে গত ২ মে থেকে ১৩ মে পর্যন্ত মোট ২শ ৫১ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। সিট সংকুলন না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা মেঝেতে অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া জেলার কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া, মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের তাসলিমা বেগম (৩৫), শহরের আরামবাগের মাহাবুবুল ইসলাম ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ওয়ার্ডের বাইরে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। শুধু এরাই নয়, অন্য আরও বেশ কিছু রোগী মেঝেতে, বারান্দায় শুয়ে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১৫ সিটের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী রয়েছে ৩৫ জন। এছাড়া হাসপাতালে ওষুধ সংকটের কারণে বাইরে থেকে স্যালাইনসহ অন্যান্য চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলাম স্যালাইন সংকটের কথা স্বীকার করে স্যালাইন আনতে ঢাকায় লোক পাঠিয়েছেন বলে জানান। গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক(মেডিসিন) প্রবীর কুমার ব্যানার্জী জানান, গরম ও পানির কারনে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে।
তবে রোগীরা সচেতন হলে এ রোগের প্রকোপ কম হবে বলে তিনি মনে করেন।
রোগী ও রোগীর স্বজনরা জানান, তাদেরকে হাসপাতালের বাইরে থেকে ওষুধ কিনে ব্যবহার করতে হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে শুধুমাত্র মুখে খাওয়া স্যালাইন দেয়া হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, প্রতি বছর এপ্রিল ও মে মাসে ডায়রিয়া জনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এসময় প্রচ- গরম থাকার কারণে এই রোগটি বেশি হয়।ডায়রিয়া রোগীদের জন্য মুখে খাওয়া স্যালাইন পর্যাপ্ত রয়েছে তবে কলেরা স্যালাইনের সরবরাহ একটু কম থাকায় পর্যাপ্ত দিতে পারছেন না বলে জানালেন তিনি। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান