খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত আজ
এস এম নূর মোহাম্মদ : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল থাকবে কি না এ বিষয়ে আজ বুধবার সিদ্ধান্ত দিবেন আপিল বিভাগ। গতকাল মঙ্গলবার জামিন বিষয়ে আদেশের কথা থাকলেও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম নতুন করে যুক্তি উপস্থাপন করায় আদেশ পেছানো হয়। আজ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চের কার্যতালিকায় মামলাটি রায়ের জন্য ১ নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে। গতকাল মামলাটি রায়ের জন্য আদালত বসার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, তার আরও কিছু ‘সাবমিশন’ বাকি আছে, যা তিনি বলতে চান। সেজন্য তিনি একদিন সময় চান। এতে প্রধান বিচারপতি বক্তব্য শোনার জন্য বেলা ১২টায় সময় ঠিক করে দেন। পরে মাহবুবে আলম শুনানিতে সাবেক জোট সরকারের মন্ত্রী নাজমুল হুদা, বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর হেলাল ও বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান টুকুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলার উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন, যদি জীবনহানির আশঙ্কা না থাকে এবং মেডিকেল বোর্ডের যথাযথ মতামত না থাকে তাহলে শুধুমাত্র অসুস্থতার যুক্তিতে জামিন দেওয়া যায় না।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মেডিকেল বোর্ড বলেনি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ। কেবল পত্রিকার খবর আর সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা বলছেন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ। এ মামলার বিচার শেষ হতে নয় বছর লেগেছে। হাইকোর্টে আপিল দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। ৯০ কর্মদিবসে যদি আপিল শুনানি শেষ না হয়, আর আসামি যদি গুরুতর অসুস্থ হয় বা মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে এবং সাজা যদি তিন বছরের ঊর্ধ্বে না হয় তাহলে অসুস্থতাজনিত কারণে আসামি জামিন পেতে পারেন। কিন্তু এই মামলায় আসামির (খালেদা জিয়া) জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের একটি যুক্তিও নেই।
তিনি বলেন, ওইসব মামলায় (হুদা, নাসিম, হেলাল ও টুকুর মামলা) রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু এ মামলায় প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এতিমদের টাকা তছরুফ করা হয়েছে। হাইকোর্ট জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে এ অভিযোগ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি, যা ফৌজদারী আইনের লঙ্ঘন।
এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেলের এ বক্তব্যের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদিন বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল যেসব মামলার সিদ্ধান্ত পড়েছেন, তা হয়েছিল জরুরি অবস্থার সময়ে এ ধরনের মামলায় হাইকোর্ট জামিন দিলে এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আপিল করেনি। এর একটি উদাহারণও নেই। অথচ কেবল খালেদা জিয়ার মামলায় সরকার আর দুদক এক হয়ে আপিল করেছে।