শরীয়তপুরে বাবা-ছেলেকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় ৩ জন গ্রেফতার
শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর সদর উপজেলার উত্তর চন্দ্রপুর গ্রামে চুরির অপবাদে খোকন মোল্যা ও তার ছেলে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র শামীমকে গাছের সঙ্গে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের দায়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার পর সোমরাতে ওই এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-সদর উপজেলার উত্তর চন্দ্রপুর গ্রামের করম আলী বেপারী, সাহেব আলী বেপারী ও সুমন বেপারী।
নির্যাতিত শিশুর মা ফাহিমা ও পুলিশসূত্রে জানাযায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের হালিম বেপারীর বাড়িতে গত ১ মে শবে বরাত দিনগত রাতে চুরি হয়। গত ৯ মে সকালে খোকন মোল্যার ছেলে, উত্তর চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালের চতুর্থ শ্রেণিরর ছাত্র শামীমকে (১১) জড়িত সন্দেহে ধরে নিয়ে হালিম মোল্যার বাড়ির কাঁঠাল গাছের সঙ্গে কোমরে লোহার শিকল লাগিয়ে গামছা দিয়ে হাত পিছমোড়া বেঁধে লাঠি দিয়ে বেদম মারপিট করে। পরে তাকে শুকনো মরিচের গুড়া খাওয়ানো হয় এবং গলা দিয়ে গরম পানিও ঢালা হয়। এর কিছুক্ষণ পর ওই বাড়ির সামনে দিয়ে শিশু শামীমের বাবা খোকন মোল্যা ভ্যান চালিয়ে আসার সময় তাকেও ধরে নিয়ে একই শিকলে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বেঁধে বেদম মারপিট করে প্রভাবশালী হালিম বেপারী, করম আলি বেপারী, সাহেব আলী বেপারী। খবর পেয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় সন্তোষপুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশু ও তার বাবাকে উদ্ধার করে। পরদিন ১০ মে সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় শামীম ও তার বাবাকে স্থানীয়রা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনার পর নির্যাতিত পরিবার সন্তোষপুর পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করে। এদিকে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার ৫ দিন পর সোমবার রাতে নির্যাতিত শিশু শামীমের মা ও খোকন মোল্যার স্ত্রী ফাহিমা বেগম বাদী হয়ে পালং থানায় মামলা করে। মামলার পর ওই রাতেই করম আলী বেপারী, সাহেব আলী বেপারী ও সুমন বেপারী গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গেফতারকৃতদের আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নির্যাতিত খোকন মোল্যা বলেন, আমার শিশুপুত্র শামীমকে চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ধরে নিয়ে লোহার শিকল দিয়ে ও গামছা দিয়ে হাত গাছের সঙ্গে বেঁধে বেদম মারপিট করেছে। আমি ওই বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে ও ধরে নিয়ে হালিম বেপারী ও তার সহযোগীরা শিকল দিয়ে বেঁধে মারপিট করেছে। এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।