প্রবাসে হুমকিতে নারীর শ্রমবাজার : ঘরে ফিরছেন গৃহকর্মীরা
তরিকুল ইসলাম: প্রবাসে বাংলাদেশি নারীদের যথেষ্ট চাহিদাপত্র থাকলেও দেশগুলোর চরম স্বেচ্ছাচারিতা ও সেখানে থাকা বাংলাদেশি দালালদের অসহযোগিতায় হুমকিতে রয়েছে নারীর শ্রমবাজার। বিশেষ করে আরব প্রধান দেশগুলোতে বাংলাদেশি নারীদের শ্রমবাজার দিনদিন বড় পরিসর পেলেও দেশগুলোতে যাওয়া নারী শ্রমিকদের অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা। সেখানে তাদের অতিরিক্ত শ্রম, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে ছ’মাসের মধ্যেই দেশে ফিরতে ব্যাধ্য হচ্ছেন সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে যাওয়া এসব নারীরা।
গত শনিবার রাতে এয়ার অ্যারাবিয়ার একটি ফ্লাইটে সৌদি আরব থেকে ৬৬ জন নারীশ্রমিক এক সঙ্গে দেশে ফিরতে পারলেও দেশটির সেইফ হোমে আটকা পরে আছেন নির্যাতনের শিকার বহু নারী। যাদের অধিকাংশই শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাদেরই একজন সাবিনা খাতুন। তিনি জানান, গতমাসে দেশটিতে গেলেও এক মাসের মধ্যেই তাকে ফিরতে হয়েছে। তার মধ্যে অর্ধেক সময় কেটেছে বিমানবন্দরের বন্দী শালায়। ভাষাগত সমস্যাতো রয়েছেই। মালিকের খারাপ ব্যাবহার ও মারধরের শিকার হয়ে ১০ দিনের কম সময়ের মধ্যেই এসে বাংলাদেশ দূতাবাসে আশ্রয় নেন।
এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি আমাদের এ প্রতিবেদককে বলেন, সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে যেতে আমাদের নারীদের খুব আগ্রহ থাকায় অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় সেখানেই তারা বেশি যাচ্ছে। এত মানুষ যেখানে রয়েছে সেখানে এটা তেমন বড় সমস্যা না। যেটা হয়, ভাষা না বুঝার জন্য একটা তালগোল পাকিয়ে যায়। বাংলাদেশের নারীরা মালয়শিয়ায় গৃহকর্মী হিসেবে যেতে চায় না। সেখানে যেতে তাদের আগ্রহ কম। কারণ, ওখানে গিয়ে তারা ভালো পয়সা পায়না। সব দেশগুলোর অভিজ্ঞতাও সমান নয়। আমরাতো কাউকে জোর করে কোথাও পাঠাচ্ছি না।
তিনি বলেন, বিদেশ থেকে যে সকল কর্মীরা চলে আসে তাদের কোনো ধরনের তথ্য আমাদের কাছে নেই। থাকবে কি করে? তারাতো আমাদের বলে আসেনা। তাই স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ঠিক কতজন প্রবাসী কর্মী ফেরত এসেছে সে তথ্য আমাদের কাছে নেই। ২০১৭ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের জন্য ১০,০৪,১৬৩ জন কর্মী বিদেশ গমন করেছে। সৌদি আরবে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ, মালয়েশিয়া এক লাখ, ওমানে ৯০ হাজার এবং কাতারে ৮২ হাজার। এর মধ্যে এক লাখ ২২ হাজার নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। সম্পাদনা: আনিস রহমান