এবার ৩৮টি নিরাপত্তা ফিচারের ই-পাসপোর্ট আসছে
সোহেল রহমান: মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) পর এবার আসছে ৩৮টি নিরাপত্তা ফিচার সম্বলিত ‘ই-পাসপোর্ট’। জার্মানীর রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ‘ভেরিডোস জিএমবিএইচ’-এর কারিগরি সহায়তায় এ পাসপোর্ট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই পাসপোর্টের মেয়াদ হবে যথাক্রমে ৫ ও ১০ বছর। প্রাথমিকভাবে জার্মান থেকে তৈরি করে ২০ লাখ ই-পাসপোর্ট আনা হবে। পরবর্তীতে দেশে যন্ত্রপাতি স্থাপন করে আরও ২ কোটি ৮০ লাখ ই-পাসপোর্ট তৈরি করা হবে। অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) চেয়ে ‘ই-পাসপোর্ট’ অধিক নিরাপদ হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১১৮টি দেশে এ ধরনের পাসপোর্ট চালু রয়েছে। ‘ই-পাসপোর্ট’ চালু হলে বর্তমান এমআরপি’র ডাটাবেইজ থেকে সব তথ্য ই-পাসপোর্ট ডাটা বেইজে স্থানান্তর করা হবে এবং বিমান বন্দর ও স্থল বন্দরে চাহিদা মোতাবেক পর্যায়ক্রমে ‘ই-গেইট’ স্থাপনের মাধ্যমে ‘ই-পাসপোর্ট’ ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করা হবে।
সূত্রমতে, গত ২০১৬ সালে ‘পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ’ উদ্বোধনকালে দেশে ই-পাসপোর্ট চালুর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে ৭ম পঞ্চবার্ষিকী (২০১৬-২০২০) পরিকল্পনায় দেশে আধুনিক ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ই-পাসপোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর জার্মান সফরকালে ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ‘ভেরিডোস জিএমবিএইচ’-এর একটি সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। কোম্পানিটি বাংলাদেশের বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর-এর সঙ্গে জি-টু-জি (সরকার টু সরকার) ভিত্তিতে কাজ করবে।
সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্ট-এর বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও কারিগরি জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও সিপিটিইউ-এর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ইউরোপের ছয়টি দেশের ৫টি কোম্পানির ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে সমঝোতা স্মারকের আওতায় জার্মানীর কোম্পানি ‘ভেরিডোস জিএমবিএইচ’-এর সঙ্গে কারিগরি ও আর্থিক বিষয় নিয়ে আলোচনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক জার্মানীর কোম্পানির সঙ্গে ৬টি সেশনে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ২৮টি বৈঠকে কারিগরি বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে আর্থিক বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে সূত্র জানায়।