৪৫০ টাকার গরুর মাংস ৫০০ টাকায় বিক্রি
শাকিল আহমেদ: সিটি করপোরেশনের বেধে দেয়া নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। আর এতে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। দাম ঠিক রাখতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) তিনটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ২৮ প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ৮৭ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। অন্যদিকে ঘোষনার মধ্যেই আটকে আছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি কাচাঁবাজার ঘুরে দেখা যায়, গরুর মাংস ৪৫০ ও খাসি ৭২০ টাকা বিক্রির কথা থাকলেও তা অতিরিক্ত দামে গরু ৪৮০ থেকে ৫০০ ও খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছে হাড় ছাড়া মাংসের দাম বেশি। এছাড়াও বেড়েছে মাছ , মুরগি ও সবজির দাম । দেশি মুরগি ৫০০ ও পাকিস্তানি মুরগি ২০০ টাকা পিস। বয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কাচাঁমরিচ ৪০ থেকে ৫০ টাকা। দেশি পিয়াজ ৫০ টাকা ও ইন্ডিয়ান পিয়াজের দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। পাইকারি বাজারে বেশি দামে কিনতে হয় বলে নির্ধারিত মুল্যে বিক্রি সম্ভব নয় বলে জানান ব্যবসায়িরা। এবিষয়ে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মর্তুজা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ছাড়া অধিকাংশ জায়গাতেই নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি হচ্ছে। তবে উত্তর সিটি করপোরেশন যদি আমাদের সাথে দক্ষিণের মত একটি সভা করতো তা হলে এ সমস্যাটা আর থাকতো না কারন উত্তরের ব্যবসায়ীরা বলেন আমাদের সাথে ৪৫০ টাকায় মাংস বিক্রির কোন কথা হয়নি এটা দক্ষিণের দাম। তবে আগামী সপ্তাহের ভিতরেই সব স্থানে দাম কমে আসবে। এবিষয়ে ডিএনসিসির সচিব দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, বাজার দর নিয়ন্ত্রনে আমরা তিনটি কমিটি করেছি। পন্যের মান ও দাম ঠিক রাখতে আমাদের মোবাইল কোর্ট চলমান রয়েছে। এবং শেষ রমজান পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। পবিত্র রমজান মাসে পন্যের দাম ও মান ঠিক রাখতে নগর ভবনে ব্যবসায়ীদের সাথে কয়েক দফা সভা করেছিলেন ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন। এসময় করপোরেশনের সচিব মো. শাহাবুদ্দিন খান কে সমন্বয়ক করে পাঁচটি অঞ্চলে পাঁচ সদস্যের বাজার মনিটরিং টিম গঠন করে দেন মেয়র। কমিটির সদস্যরা হলেন,সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নির্বাহী কর্মকর্তা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, মসজিদের ইমাম, এলাকার একজন গন্যমান্য ব্যক্তি ও বাজার কমিটির একজন সদস্য। এসময় মেয়র বলেন পন্যের দাম গতবারের চেয়ে এবার কম আছে এছাড়া পর্যাপ্ত পন্য মজুদ আছে। তাই দাম বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কেই দাম বাড়ালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু দাম না বাড়ানোর কথা দিলেও তা রাখেনি ব্যবসায়িরা। কৃতিম সংকট তৈরী করে বাড়ানো হয়েছে পণ্যের দাম। গ্রীন রোডের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলি রিপন বলেন, রমজানের আগে সব কিছুর দাম ঠিক থাকলেও রমজানে সব কিছুর দাম বাড়ানো হয়েছে, যা আমাদের মত স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য অনেক কষ্টের। এবিষয়ে ডিএসসিসির সচিব শাহাবুদ্দিন খান বলেন, দাম বেশি রাখার বিষয়টি আমরা জেনেছি। ব্যবসায়ীরা বেশি দামে পন্য কেনার অযুহাত দেখায়। পাঁচটি অঞ্চলে আমাদের প মনিটরিং টিম কাজ করলেও কোন মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়নি। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হলে ব্যবসায়ীরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে তা হলে আবার নতুন সমস্যা সৃষ্টি হবে। তাই রমজান মাসে তাদের নৈতিক ভাবে সচেতন করে দাম নিয়ন্ত্রনে রাখতে চেষ্টা করছি।