ঝড়-বৃষ্টিতে পাটের উৎপাদন কমার আশঙ্কা
বিশ্বজিৎ দত্ত : এমনিতেই বাজারে ভাল দাম পাওয়া যায় না বলে সারা দেশে পাট চাষ কিছুটা হলেও কমেছে। প্রতি বছর পাট ক্রয়ের নুন্যতম মূল্য ঘোষণা করলেও, চাষিরা ওই দামে সব পাট বেচতে পারেন না। তার উপর হালে এই সমস্যার দোসর হয়েছে প্রবল ঝড?বৃষ্টি। ফলে এ বছর কাঁচা পাটের উৎপাদন বেশ খানিকটা ধাক্কা খাবে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলের।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এই মৌসুমে ৮০ লাখ বেল (১ বেল সমান ১৮০ কেজি) কাঁচা পাট উৎপাদন হবে বলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু আবহাওয়া ও অন্যান্য কারণে বড? জোর ৬০ থেকে ৬৫ লক্ষ বেল পাট উৎপাদন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সাধারণত মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে জমিতে পাটের বীজ বোনা শুরু হয়। কিন্তু এ বছর মার্চের শেষ থেকে গোটা এপ্রিল, এমনকী মে মাসেও যে ভাবে নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ এবং উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় লাগাতার ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, জানাচ্ছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। জমিতে বৃষ্টির জল জমেছে। ঝড়ের দাপটে ভেঙেছে গাছের মাথা। কোথাও বড? পাট গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। তাদের মতে, এর ফলে কাঁচা পাটের উৎপাদন ধাক্কা খেতে বাধ্য।
গত বছর অভিযোগ উঠেছিল, ঠিক দাম না পেয়ে চাষিরা কম দামে পাট বেচতে বাধ্য হয়েছিলেন। যা নিয়ে বিক্ষোভও হয়। সরকার পাটের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল ১৭০০ টাকা মন। কিন্তু মিলগুলো সময়মতো দাম পরিশোধ না করার কারণে চাষিরা বাজারে কমদামে পাট বিক্রি করেছে। চাষিরা পাটের মূল্য দাবি করেছিল প্রতিমন ২ হাজার টাকা। এবছর একারণেও চাষিরা পাট চাষে কিছুটা অনিহা দেখিয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক, ড. মোহম্মদ জাহাঙ্গির আলম জানান, সরাদেশে ১০ মিলিয়ন পাট চাষি রয়েছেন। গড়ে ৮ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। এরমধ্যে ৪৪ ভাগ কাঁচাপাট বিদেশে রপ্তানি করা হয়। তিনি জানান, বিশ্বে পাঁট পণ্যের চাহিদা ৭ দশমিক ৫০ লাখ টন। বাংলাদেশ পাটপণ্য রপ্তানি করে ৪ দশমিক ৬০ লাখ টন পাট। ভারত করে ২ দশমিক ৮৫ লাখ টন।