লক্ষ্মীপুরে মেঘনায় অবাধে চলছে গলদা-বাগদা চিংড়ির পোনা আহরণ
জহিরুল ইসলাম শিবলু,লক্ষ্মীপুর : নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীতে অবাধে চলছে গলদা ও বাগদা চিংড়ির পোনা আহরণ। এতে ধ্বংস হচ্ছে নদী ও সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। জেলেরা প্রকাশ্যে গলদা-বাগদা চিংড়ি পোনা আহরণ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও স্থানীয় নেতাকর্মী, মহাজনদের ও গলদা-বাগদা চিংড়ির ট্রাক পারাপারে সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরী ঘাট, বুড়ির ঘাট, কমলনগর উপজেলার মতিরহাট, সাহেবের হাট, লুধুয়া ঘাট, রায়পুর উপজেলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন ঘাট এলাকায় ও রামগতি উপজেলার চর গজারিয়ায় মেঘনার নদীর বিস্তৃণ এলাকা জুড়ে এভাবেই চলছে গলদা-বাগদা চিংড়ি পোনা ধরার মহাউৎসব। এ পোনা অতি ক্ষুদ্র হওয়ায় তা ধরতে যে জাল ব্যবহার করা হয় তাতে ধ্বংস হয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনাও। এ জন্য নদীতে চিংড়ি পোনা শিকার নিষিদ্ধ করেছে সরকার। তবে সে নিষেধাজ্ঞা মানছে না জেলেরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে রায়পুর পর্যন্ত মেঘনা নদীর বিস্তৃণ এলাকা জুড়ে চলছে গলদা-বাগদা চিংড়ির পোনা ধরার মহাউৎসব। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে স্থানীয় সরকার দলীয় লোক জনদের চত্রছায়ায় মহাজনরা জেলেদের ঋণের টাকা দিয়ে পোনা ধরতে বাধ্য করছেন। এছাড়া ক্ষমতার ধাপট দেখিয়ে সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রকাশ্যে নদীর পাড়ে চলছে গলদা-বাগদা চিংড়ি পোনার ব্যবসা। বাজারে প্রতিটি গলদা-বাগদা চিংড়ি পোনা বিক্রি হয় ১/২ টাকা করে। এক এক জেলে প্রতিদিন বিক্রি করছে ২শ’ থেকে ৩শ’ পোনা। মহাজনরা অগ্রিম ঋণ দেয়ায় পোনা শিকারে উৎসাহী হয়ে উঠছে জেলেরা। রেনু পোনা শিকারীরা জানান, বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই রেনু পোনা শিকার করতে হচ্ছে তাদের।
রেনু ব্যবসায়ীরা আবুল হোসেন জানান, জেলেদের কাছ থেকে তারা এক টাকা দরে রেনু পোনা কিনে খুলনার আলায়পুর ও ডুমুরিয়াসহ বিভিন্ন জেলার গলদা ও বাগদা চিংড়ির ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্যাহ্ গলদা ও বাগদা পোনা ধরার কথা স্বীকার করে মেঘনার অভয়াশ্রমে চিংড়ি পোনা শিকারিদের নিবৃত করার জন্য ঝটিকা অভিযানসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানান। এছাড়া সম্পতি রামগতি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার চিংড়ি পোনা জব্দ করা হয়। এ সময় স্থাপনা গুলো ভেঙে দেওয়া ও জব্দ হওয়া পোনাগুলো মেঘনা নদী ও পুকুরে অবমুক্ত করা হয়।