‘অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে সরকারকে সমভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে’
রাশিদুল ইসলাম মাহিন: আমাদের দেশে নতুন কিছু ব্যাংক চালু হয়েছে, সে ব্যাংকগুলো আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরকে বেছে বেছে দেওয়া হয়েছে। যেমন: ফারমার্স ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংকসহ বেশকিছু ব্যাংকগুলোর মালিক আ’লীগরা। অনেক বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে, যেগুলো অর্থনৈতিক সংকটে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যেখানে টাকা রাখার একটি নিরাপদ স্থান কিন্তু সেখান থেকেও টাকা চুরি হয়ে যাচ্ছে। কোটি কেটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেলো আর সেই টাকা ফিরিয়ে আনার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। আমাদের অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ ব্যাংক হতে চুরি হয়ে যাওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে এগারো বার সাংবাদিকদের বলেছিলেন। কিন্তু আজো সেই চুরি হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কোন সুরাহা করতে পারেননি। তিনি এখন বলছেন, এ ঘটনা প্রকাশ করতে পারবো না। যারা চুরি করেছে, তারা অনেক শক্তিশালী। এজন্য আমি তাদের নাম প্রকাশ করতে পারছি না। তাহলে এই শক্তিশালী কারা? এমন প্রশ্নই তুলে ধরেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি আরো বলেন, এখন কৃষি ব্যাংক ডুবতে বসেছে। কৃষি ব্যাংক থেকে কৃষকরা ২০-৩০ হাজার টাকা লোন নিতে পেরেছে। সেখানে ২ লাখ কৃষকের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সচিবালয়ে ২২ লক্ষ কর্মকর্তা রয়েছে, এর মধ্য অনেক কর্মকর্তা ঠিকমতো ট্যাক্স দিচ্ছে না। কিন্তু সেসব কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ছে এবং তারা সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছে। তাদের গাড়ি-বাড়ির সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অথচ যারা আমাদের দেশের অর্থনীতির প্রাণ; যাদের জন্য আমাদের অর্থনীতি টিকে রয়েছে; তারা মামলা খেয়ে বসে রয়েছে। তাদের জন্য কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
বিএনপি’র এই নেতা আরও বলেছেন, সরকার এভাবে ব্যাংক না বাড়িয়ে বরং লোকবল কমিয়ে দিয়ে তহবিল বাড়িয়ে হলেও ব্যাংকগুলোকে বাঁচাতে পারতো। তখন হয়তো অর্থনৈতিকভাবে আমাদের কিছুটা হলেও স্বচ্ছলতা ফিরে আসতো। কিন্তু সেখানে আরো অর্থের যোগান দেওয়া হচ্ছে। যেটা কোন সমাধান হতে পারে না। অর্থমন্ত্রী গত ২৮ মে বলছেন ‘টাকা পাচার হয়ে গেলে সেখানে আমি কি করব।’- এটি তার অর্থনৈতিক বিষয়ের ওপর অসহায়ত্ব বলেই বোঝা যায়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতটি অনেক বিপর্যয়ে নেমে গিয়েছে। এখন অর্থনীতি খাদের কিনারায় রয়েছে, যখন এ খাদের কিনারায় থেকে নিচে পড়ে যাবে। তখন গ্রিস বা ইতালির অর্থনীতির মতো হবে, যেমনটা একযুগ আগে তাদের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ ছিল। সরকার যদি এদিকে নজর না দেয়, তাহলে আমাদের অবস্থাও এমন ধসে পড়তে পারে। আমাদের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের সরকারকে চোখ বন্ধ করে সমভাবে আইন প্রয়োগ করে কাজ করতে হবে। যদি সরকার সেটা না করেন, তাহলে বর্তমান অর্থনীতির যে ধস নেমেছে, সেটা ঠেকানো যাবে না। তখন অর্থনীতির ধস আসতে বাধ্য।