জি-৭ বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে পথ তুলবেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী
তরিকুল ইসলাম : রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কানাডা অকুন্ঠ সমর্থন দিচ্ছে বাংলাদেশকে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ‘জি-৭’ শীর্ষ সম্মেলনে নিজেই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথ তুলবেন। সমৃদ্ধশালি দেশগুলোর এই জোটটি তাদের আগামী সম্মেলনে গুরুত্বর সাথে বিষয়টি আলোচনা করবে। রোহিঙ্গা সঙ্কট বৈশ্বিক শান্তি, প্রগতি এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি হওয়ায় দ্রুততম সময়ে এর সমাধান চায় ‘জি-৭।’ এমনটাই জানিয়েছেন ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।
জোটের ৪৪ তম সম্মেলনটি আগামী ৮ ও ৯ জুন কানাডার কুইবেক শহরে অনুষ্ঠিত হবে। জি-৭ এর সদস্য দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইটালি, জাপান ও জার্মানি। অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনের আউটরীচ প্রোগ্রামে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সম্প্রতি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিলেন্ড ঢাকায় ৪৫তম ওআইসি সম্মেলনে যোগদানকালে এই আমন্ত্রণ জানান।
আশা করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে অংশ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ জুন কানাডায় যাবেন। যদিও এর আগে ২০১৬ সালে সংগঠনটির জাপান শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রিত হয়ে অংশ নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। খুব কম দেশই দু’বছরের মাথায় এ আমন্ত্রণ পেয়ে থাকে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো রোহিঙ্গা ইস্যুতে উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, সামনের জি-৭ এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে চলমান রোহিঙ্গা সংকটকে অর্ন্তভুক্ত করেছি। এই বিষয়টি এখন বৈশ্বিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগের।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল ব্রিটেনের এশিয়া বিষয়ক মন্ত্রী মার্ক ফিল্ড দেশটির পার্লামেন্টে এমপিদের একাধিক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সংকটটি নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগামী জি-৭ এর সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আলোচনা করবেন। বৈঠকে সম্মিলিতভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যাতে এই সংকটের সমাধান হয়। বৈঠক থেকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শক্ত বার্তাও দেওয়া হবে। চলমান রোহিঙ্গা বিষয়টি খুবই উদ্বেগের।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চল পরিদর্শন করেন। সে সময় জনসন বলেন, রাখাইনের ঘটনায় আমি হতবাক। অঞ্চলটিতে পুরোপুরি ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। শত শত ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের ঘরে ফেরার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আমি অং সান সুচির সঙ্গে আলাপ করেছি। কিন্তু সুচি ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানেন কিনা, এই বিষয়ে আমি সন্দিহান।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড জানান, প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ দূত বব রায়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সফর করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তার প্রতিবেদনটি জি-৭ এর সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে। গত ফেব্রুয়ারিতে কানাডায় ফিরে বব রাে য় বলেন, এ সংকট নিয়ে এই বিষয়ে সকলের কথা বলা প্রয়োজন। আরও অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার বিষয়ও রয়েছে। এখন যেমন চলছে এমন ভাবে কোনো সমাধান আসবে না।