ট্রাম্প স্থিতিশিলতা নষ্ট করায় বড় শক্তিগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করছে ভারত
সাউথএশিয়ান মনিটর : ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজের দেশের উপস্থিতি জোরদার করাই যেন ভারতের প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মিশন। তিনি ইতোমধ্যে চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একরতফা সিদ্ধান্ত নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক সুক্ষ্ম ভারসাম্য এবং প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা নষ্ট করার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এই বহুমুখি কূটনৈতিক উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। এই উদ্যোগ ফল দিতে শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে। তাছাড়া বিশ্বের বড় দেশগুলোর কাতারে নিজের স্থান করে নিতে ভারত দীর্ঘদিন ঘরে যে উচ্চাকাঙ্খা পোষণ করে আসছে তা হাসিলের জন্য মোদি সময়টিকে কাজে লাগাচ্ছেন। গত জানুয়ারিতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুকে স্বাগত জানানোর মধ্য দিয়ে এই ৬৭ বছর বয়সী নেতার আক্রমণের সূচনা। এর পরের মাসে জর্ডান, ফিলিস্তিন, আরব আমিরাত ও ওমানের নেতাদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করেন।
এরপরই নয়াদিল্লি সফর করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য ভারত ইরানের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করছে। মার্চে ভারত সফর করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো। তখন দুই নেতা পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতায় একমত হন এবং ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ প্যাসিফিকে একটি নতুন সামুদ্রিক নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে আলোচনা করেন।
এপ্রিলে মোদি চীনের প্রসিডেন্ট শি জিনপিংয়েরর সঙ্গে এক ঐতিহাসিক ‘অনানুষ্ঠানিক’ শীর্ষ বৈঠক করেন। এ নিয়ে এক টুইট বার্তায় মোদি বলেছেন, ‘আমরা আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো নিয়ে কথা বলেছি।’ ওয়াশিংটনভিত্তিক ইন্সটিটিউট ফর চায়না-যুক্তরাষ্ট্র স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো সৌরভ গুপ্ত বলেন, চীন ও ভারতের নেতাদের নতুন করে আলোচনা শুরুর জন্য ইউহান বৈঠকটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এই বৈঠক এশিয়ার ভূরাজনৈতিক সচলতাকে বদলে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই অঞ্চলে বৈঠকটির প্রভাব হতে পারে সুদূরপ্রাসারী। বিশেষ করে জাপান যখন নয়াদিল্লির সঙ্গে হাত মিলিয়ে চীনের বিরুদ্ধে পাল্টা ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
২১ মে কৃষ্ণসাগরীয় অবকাশকেন্দ্র সোচি সফর করেন মোদি। সেখানে তার আরেক অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে।
রাশিয়া ভারতের দীর্ঘদিনের মিত্র এবং প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী। রাশিয়ার অস্ত্র কেনার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করছে ভারত। ভারতকে এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখতে নয়াদিল্লি’র অনুরোধে ওয়াশিংটন কান দেয়নি।
তাছাড় ৮ মে যুক্তরাষ্ট্র একতরফা ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বাতিল করে এবং তেহরানের বিরুদ্ধে ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ভারতের উপর এরও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ