পরিবেশ দূষণ রোধে প্লাস্টিকের উৎপাদন বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগের দাবি টিআইবির
ফয়সাল মেহেদী: পরিবেশ দূষণ রোধে প্লাস্টিকের বেআইনী উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং ব্যবহার রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ রোধে আট দফা দাবি পেশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল এক বিবৃতিতে এসব দাবি পেশ করেছে সংস্থাটি। এতে পরিবেশ দূষণ রোধে ব্যবহৃত তহবিলসহ জলবায়ু অর্থায়নে পরিচালিত সব কার্যক্রমে স্বচ্ছতার চর্চা ও জন-অংশগ্রহণ বৃদ্ধিরও আহ্বান জানানো হয়েছে।
৫ জুন বিশ^ পরিবেশ দিবস উপলক্ষে দেওয়া বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ এরই মধ্যে বিশে^র অন্যতম প্রধান ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশি^ক কারণগুলোর পাশাপাশি, দেশের ভিতরে অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকান্ড বাংলাদেশের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশে^র প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০০২ সালে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন করা হলেও, কার্যকর প্রয়োগের অভাবে এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই যত্রতত্র নির্বিচারে পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে এবং প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য নদী-নালা, খাল-বিল ও উন্মুক্ত জায়গায় ফেলা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ ধরণের দূষণ বন্ধ করতে হলে প্লাস্টিকের বেআইনী উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। আমরা মনে করি, আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হলে প্লাস্টিকের অবৈধ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি দূষণ কর ব্যবস্থাও চালু করা যেতে পারে।
ড. জামান আরও বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নসহ প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্য প্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা। এছাড়া প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশও পরিবেশ, বনভূমি এবং জীব-বৈচিত্র্য রক্ষাসহ সব ধরনের অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
‘প্যারিস চুক্তি’ অনুযায়ী বাংলাদেশসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের জন্য প্রতিশ্রুত তহবিল, স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত ও সহজতর পদ্ধতিতে ছাড় করানোর জন্য ড. জামান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ রোধে ব্যবহৃত তহবিলসহ সার্বিকভাবে জলবায়ু অর্থায়নে পরিচালিত কার্যক্রমে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব আরোপ করছে টিআইবি। ড: জামান বলেন, এসব কার্যক্রমে জন-অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে এবং আর্থিক লেনদেন ও কর্মসম্পাদন প্রতিবেদন স্ব-প্রণোদিতভাবে প্রকাশ করতে হবে।
উল্লেখ্য, বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০১৮ এর মূল প্রতিপাদ্য ‘আসুন প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি, প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার করি, না পারলে বর্জন করি’। দিবসটি উপলক্ষে টিআইবি প্রচারণামূলক কর্মসূচির আওতায় দেশব্যাপী মানব বন্ধন ও র্যালী, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে রচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।