টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ বৃক্ষশিশু রিপনের
জাকির হোসেন,পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও):‘মা আব্বা আর দুই বোন ছাড়া আমাকে কেউ পছন্দ করে না। স্কুলে কেউ আমার কাছে আসতে চায় না চামুচ দিয়ে ভাত খাই। অন্য বন্ধুদের মত খেলতে পারি না । কোন কাজ করতে পারি না।’ খুব নিচু স্বরে কথাগুলো বলছিল ৯ বছর বয়সি শিশু রিপন। জন্মের ৬ মাসের মাথায় অজ্ঞাত এক জটিল রোগে আক্রান্ত হয় সে। গুটি গুটি হাতপায়ের তালু শুকনো ঘায়ে ভরে গেছে তার হাত ও পায়ের তালু। এ অজ্ঞাত রোগে বন্দি হয়ে পড়েছে তার শৈশব। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের কেটগাঁও গ্রামের জুতা সেলাইয়ের কাজে নিয়োজিত দরিদ্র মহেন্দ্রনাথ রায়ের একমাত্র ছেলে রিপন। উপজেলা কেটগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করার সুযোগ হয় তার। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট রিপন। বৃক্ষ শিশু রিপনের বাবা মহেন্দ্রনাথ রায় জানান, রিপন স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারে না কিংবা হাত দিয়ে খাওয়া-দাওয়াও করতে পারে না, এ অবস্থা দেখে তার সাথে কেউ খেলতেও চায় না। তার মা গোলাপী রাণী জানান, স্থানীয় ডাক্তার দেখিয়েছি, কিন্তু কোন লাভ হয়নি। চিকিৎসকরা ঢাকা নিয়ে যেতে বলেছিল, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, জেলা প্রশাসক ও স্থানীয়দের আর্থিক সহযোগিতায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েকবার অপারেশন করা হয়। ফলে কিছুটা সুস্থ হয় রিপন। বর্তমানে রিপন তার বাড়িতে ২ মাস ধরে অবস্থান করছেন। কিন্তু কোন প্রকার ওষুধ কেনার টাকা নেই আমাদের কাছে। কোনো সরকারি সহযোগিতা বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতা না পাওয়ায় থমকে গেছে তার চিকিৎসা, বিপাকে পড়েছি আমরা। ফলে দিন দিন তার রোগটি বেড়েই চলছে বলে রিপনের মা জানান। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র রায় জানান, এ রোগের চিকিৎসা করা ব্যয়বহুল, সরকার ও সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসলে চিকিৎসা করা সম্ভব হবে।