খেলাপি ঋণ সৃষ্টির কারণ ও ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’
ড. আহমদ আল কবির : ব্যাংকারদের দায়িত্বহীনতাও খেলাপি ঋণ সৃষ্টির জন্য একটি বড় কারণ। ঋণ প্রদানের সময় সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা হয় না। অনেকেই ঋণ প্রদানের সময় অনৈতিক কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়েন। দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করেন। বিভিন্ন পর্যায়ে পার্টিকে অবৈধ অর্থ খরচ করতে হয়। ঋণ মঞ্জুরকালে দীর্ঘসূত্রিতা দূরীকরণের জন্য প্রত্যেকটি ব্যাংকে কার্যকর ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালু করতে হবে। ডিএইচএল একটি মেইল পাঠানোর পর ট্রেকিং বা মনিটরিং করে। তারা তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারে তাদের পাঠানো মেইলটি কোথায় কি অবস্থায় আছে।
তথ্য-প্রযুক্তির যুগে খুব সহজেই এসব বিষয় ট্র্যাকিং করা সম্ভব। ঋণ প্রদানকালে আবেদনপত্রটি কি অবস্থায় আছে তা খুব সহজেই জানা সম্ভব। ট্র্যাকিং -এর মাধ্যমে গ্রাহককে জানাতে হবে তার ফাইলটি কোন কর্মকর্তার নিকট কি অবস্থায় পড়ে আছে। কোনো কর্মকর্তার নিকট অকারণে বিলম্ব হলে তাকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা যেতে পারে। এতে কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে, স্বচ্ছতা সৃষ্টি হবে। গ্রাহকের কেনো কাগজের স্বল্পতা থাকলে সম্ভব স্বল্পতম সময়ের মধ্যে আবেদনকারীকে অনলাইনে জানিয়ে দিতে হবে। এটা করা হলে অকারণে পার্টিকে ঘোরানোর প্রবণতা এবং দুর্নীতির সুযোগ কমে আসবে। এ ছাড়া ব্যাংকের সব কর্মকর্তার একই রকম যোগ্যতা থাকে না। অনেকেই আছেন যারা ঋণ আবেদনপত্র প্রক্রিয়াকরণের যোগ্যতা রাখেন না।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিতে হবে। ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হলে কেউ অলসভাবে বসে থাকতে পারবেন না। আমি ওয়ান স্টপ সার্ভিসের জন্য আরও দুটি সাজেশন রাখতে চাই। কেউ যদি খুব দ্রুত কোনো কিছু চায় তাহলে তাকে হায়ার লেভেল বা বেশি ফি প্রদান করবেন। তাকে টাইম বলে দেওয়া হবে তার কাজটি কখন হবে। এটা করা হলে ব্যাংকের আয়ের নতুন একটি রাস্তাও সৃষ্টি হবে। আবার কেউ যদি স্বাভাবিক সময়ের কাজটি করতে চান তাহলে তাকে স্বাভাবিক ফি দিলেই চলবে।
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলোর উপর জোর দিয়ে তা বাস্তবায়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে খেলাপি ঋণ থেকে উদ্ধার পাওয়া সহজ হবে।
লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, রুপালী ব্যাংক