প্রস্তাবিত বাজেট পুরোপুরি ব্যবসাবান্ধব নয়
স্বপ্না চক্রবর্তী: ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে ব্যবসায়ীদের কিছু চাওয়া পূরণ হলেও বেশিরভাগই অপূর্ণ রয়ে গেছে। তাই এই বাজেটকে পুরোপুরি ব্যবসাবান্ধব হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর সভাপতি আবুল কাসেম খান।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রয়ায় ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসায়ীদের ১০০ শতাংশ চাহিদার মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই প্রস্তাবিত বাজেটে পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানীর করের হার ৪০শতাংশে হতে ৩৭.৫ শতাংশে কমিয়ে আনা এবং নন-পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানীর করের হার ৪২.৫ শতাংশ হতে ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হলেও, পাবলিকলি ও নন-পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানী এবং মার্চেন্ট ব্যাংক খাতে বিদ্যমান করের হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যার কারণে পুনঃবিনিয়োগের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়তে পারে। বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, জিডিপিতে বেসরকারিখাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বিদ্যমান ২৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে ২৫.১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হলেও কর্পোরেট করের হার কমানো না হলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে। অথচ জিডিপিতে বিনিয়োগের পরিমাণ ১ শতাংশ বাড়াতে হলে প্রায় ২৪-২৫ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত বিনিয়োগ প্রয়োজন। এমতাবস্থায় ঢাকা চেম্বার মনে করে, জিডিপিতে বেসরকারিখাতের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে হলে কর্পোরেট সেক্টরের সকল খাতে করের হার ন্যূনতম ২.৫ শতাংশ হারে কমানো প্রয়োজন। তবে কোম্পানীর লভ্যাংশের ওপর দ্বৈত করের হার কামানোর প্রস্তাব কে সাধুবাদ জানান তিনি। বাজেটে বার্ষিখ উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) খাতে ১লাখ ৭৩হাজার কোটি টাকা বরাদ্দকেও সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩৯হাজার ২৮০ কোটি টাকা যা কিনা পূর্ববর্তী বছরের তুলনা ১৬.৫৯শতাংশ বেশি তাই এটিকেও আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩লাখ ৩৯হাজার ২৮০ কোটি টাকা যার মধ্যে এনবিআরের উৎস থেকে ২লাখ ৯৬হাজার ২০১ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য করের আওতা বাড়াতে কার্যক্রর উদ্যোগ ও পরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চেম্বার সভাপতি আবুল কাসেম খান-এর সভাপতিত্বে ডিসিসিআই বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত এ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট সম্পর্কে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা ছাড়াও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় জানানো হয়, প্রস্তাবিত এই বাজেট আরো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে আগামী শনিবার-এর পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের অবস্থান সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরা হবে। সম্পাদনা: আনিস রহমান