ঈশ্বরদীতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা
সেলিম আহমেদ, ঈশ্বরদী(পাবনা): ঈশ্বরদীতে জমে উঠেছে এবারের ঈদের কেনাকাটা। আলোক ঝলমলে শহরের শপিংমলগুলোতে পরিলক্ষিত হচ্ছে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই মার্কেটগুলোতে কেনাবেচা জমে উঠছে। ঈদে ক্রেতার চাহিদা মাথায় রেখে বিক্রেতারাও আগে ভাগেই তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন। অন্যান্য বছর রমজান মাসের শেষের দিকে ঈদের কেনাকাটা জমলেও এবার ১৫ রমজান পার হতে না হতেই ঈশ্বরদীর বিভিন্ন বিপণী বিতানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শহরের কাপড়পট্টি, মনির প্লাজা, জাকের প্লাজা, পৌরসুপার মার্কেটসহ বড় বড় মার্কেটগুলোতে যেন তিলধারণের ঠাঁই নেই।
এবারের কেনাকাটায় নারী, শিশু এবং বিশেষ করে ফ্যাশন সচেতন তরুণীরাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে। সেই সঙ্গে পিছিয়ে নেই পুরুষ এবং তরুণরাও। তরুণীদের পছন্দের পোশাক এবার ‘কিরনমালা থ্রি-পিস। তরুণদের রঙিন পাঞ্জাবি এবং শিশুদের তানসি ফ্রকসহ রকমারি পোশাক। উপরন্তু এবার ঈদে ঈশ্বরদীতে নতুন আকর্ষণ মেয়েদের হাল ফ্যাশনের ‘বাজিরাও মাস্তানি’, সারারা, ফ্লোর টার্চ, আনার কলি, গাউন, পাখি ও লেহেঙ্গা পোশাক। সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এবার ঈদে ঈশ্বরদীতে নতুন আকর্ষণ মেয়েদের হাল ফ্যাশনের ‘বাজিরাও মাস্তানি’ বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৫শ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এবারে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের থ্রি-পিস ১ হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। শাড়ির দাম ৫শ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। ছেলেদের পায়জামা-পাঞ্জাবি ১২শ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। শেরওয়ানি বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ১১ হাজার টাকায়। শহরের গার্মেন্টসের দোকানগুলোতে ক্রেতারা তাদের পছন্দের পোশাক কিনছেন। শিশুদের তানসি ফ্রক প্রকার ভেদে ৬শ টাকা থেকে ৭ হাজার টাকা, কিরনমালা থ্রি-পিস ৬শ টাকা থেকে প্রায় ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাড়ির দোকানগুলোতেও প্রচ- ভিড়। জামদানি, বেনারসি, কাতান, কাঞ্জিলরাম, মিরপুর সিল্ক এবং তাঁতের সূতি শাড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। জামদানির লেহেঙ্গা ৫শ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তরুণি ক্রেতাদের পাশাপাশি তরুণরা এবার রঙিন পাঞ্জাবির প্রতি বেশি ঝুঁকছে। ঈদের কেনাকাটা করতে সপরিবারে ঈশ্বরদী বাজারে এসেছেন দাশুড়িয়ার মাহাবুবুর রহমান, সলিমপুরের আলম সরদার। মাহাবুবুর বলেন, প্রতিবছর জিনিসপত্রের দাম তো বাড়ছেই। তবে এবার পোশাকের দাম বেশি মনে হচ্ছে। কাপড়পট্টি মার্কেটের থান কাপড় ও ছিট কাপড় ব্যবসায়ী জিপা ক্লথ স্টোরের মালিক সাইফ হাসান সেলিম বলেন, থান বা ছিট কাপড়ের জন্য আগে থেকেই ঈশ্বরদীর একটা সুনাম রয়েছে আর তাই রোজার শুরু থেকেই থান বা ছিট কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কারণ, ছিট কাপড় কিনে সেগুলো তৈরি করতে সময় লাগে। এ জন্য ক্রেতারা ঈদকে কেন্দ্র করে একটু আগে ভাগেই কেনাকাটা সেরে থাকেন। ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির নির্বাহী সদস্য সেলিম আহমেদ বলেন, ঈশ্বরদীতে বেশ কিছু ভালো মানের তৈরি পোশাক বিক্রির দোকান গড়ে উঠেছে। দোকানগুলোতে ক্রেতাদের রুচি ও ফ্যাশনের কথা মাথায় রেখে বিক্রেতারা পণ্যের সমাহার রাখছেন। ফলে ঈশ্বরদীতে লোকজনকে কেনাকাটার জন্য বাইরের শহরে যেতে হয় না। ঈশ্বরদী ছাড়াও বর্তমানে আশপাশের লালপুর, বাঘা, ভেড়ামারা, আটঘরিয়া, বড়াইগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন ঈশ্বরদীতে কেনাকাটা করতে আসছেন। এ ঈদে এসেছে বেশ কিছু নতুন নামের শাড়ি। সাজিয়া সাওয়ারি, আজিজা জামদানি, টিসু লোন শাড়ি, ব্লক শাড়ি, নাসা শাড়ি, কুচি জর্জেট, লেহেঙ্গা শাড়ি, জল নুপুর, রাশি, চন্দ্রি, কুমকুম, জাবেদ কাতানসহ বাহারি নামের শাড়ি। আর ঢাকাই জামদানি, টাঙ্গাইল সিল্ক, রাজশাহী সিল্ক, জামদানি তসর সিল্ক, জর্জেট তো আছেই। এসব শাড়ি নাম ও প্রকার ভেদে মূল্য নির্ধারণ করে রেখেছেন দোকানিরা। তবে এবারে বাজারে শাড়ির দাম একটু বেশি বলেন দোকানিরা। দোকানিরা বলছেন, ১৫ রমজানের পর থেকেই বেচাকেনা জমে উঠেছে।
এখন শুধু নারী, শিশু এবং তরুণ-তরুণীদেরই ভিড় বেশি।