পাথরঘাটা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে তালগাছ
ইমরান হোসাইন, পাথরঘাটা (বরগুনা): সুষ্ঠ রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে পাথরঘাটা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশবান্ধব তালগাছ। একসময়ে তালগাছ ছিল গ্রামের সৌন্দর্যের প্রতিক। গ্রামীণ অর্থনীতিতেও তালগাছের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামের ঘর তৈরিতে বিশেষ করে গ্রামের গরিবের এসি খ্যাত মাটির ঘর তৈরিতে তালগাছ ছিল অতুলনীয়। কালের গর্ভে তালগাছের অস্তিত্ব এখন অনেকটাই সংকটে পরিণত হয়েছে।
তালগাছের কোনো শাখা-প্রশাখা নেই, আলো-বাতাস প্রবাহ বাধা প্রধান করে না। তাই আবাদযোগ্য জমির ধারে (আইলে) তালগাছ রোপণ করা যায়। আমাদের দেশে বড় লম্বা গাছগুলোর মধ্যে তালগাছ অন্যতম। চমৎকার পত্রপল্লব বিশিষ্ট এই তালগাছ বাবুই পাখির অন্যতম আশ্রায়স্থল। আগের দিনে তালগাছ গুলো শত শত বাবুই পাখি বাসা বাধত। পূর্ণ বয়ষ্ক একটি তালগাছ ৭০ থেকে ৮০ ফুট প্রর্যন্ত লম্বা হয়। তালগাছ ৯০ থেকে ১২০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বছর বেঁচে থাকে। তালগাছ এমন একটি বৃক্ষ যার প্রতিটি শাখা-প্রশাখা কোনো না কোনো কাজে লাগানো যায়। তালগাছের পাতা দিয়ে হাতপাখা তৈরি । আর পাতার শিড়া দিয়ে সুন্দর টুপি তৈরি করা হয়। তালগাছের কাঠ খুব মজবুত। তালগাছের কাঠ দিয়ে ঘরে খুঁটি ছাড়াও নানা কাজে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া গ্রামের ঐতিহ্য বর্ষাকালে ডিঙ্গি নৌকা তৈরি করা যায়। তালগাছকে ওয়াটার প্রুপ গাছ বলা হয়। বজ্রপাত থেকে রক্ষায় তালগাছের বিকল্প কিছু নেই। মাত্র দেড়-দুইদশক আগেও গ্রামাঅঞ্চলে প্রচুর তালগাছ ছিল ওই সময়ে গ্রামের মাঠের পর মাঠ বৃষ্টির মধ্যে কৃষক কাজ করত কিন্তু সে সময়ে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে তালগাছ শূন্য হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত আর মেঘের গর্জন হলেই বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এবিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা বন ও পরিবেশ কমিটির সভাপতি ফাতিমা পারভীন বলেন, তালগাছ একটি উপকারী গাছ। এটি রোপণ করলেই হয়, অতিরিক্ত যতœ করতে হয় না। আমাদের উচিত বেশি বেশি তালগাছ রোপণ করা যায়।