ভারতীয় নৌ ঘাঁটির বিরুদ্ধে মরিশাসের দ্বীপবাসীর তীব্র প্রতিরোধ
সাউথএশিয়ান মনিটর : মরিশাস দ্বীপে নৌ ঘাঁটি স্থাপনের যে প্রস্তাব দিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে দ্বীপবাসী। আগেলেগা দ্বীপে জোট বেঁধেছে ছয়টি সংগঠন। ভারতের দণিাঞ্চলীয় কন্যাকুমারী উপকূল থেকে ৩১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই দ্বীপে তার একত্রিত হয়ে কোয়ালিশান জিলওয়া পাউ লাপে (আইল্যান্ডারস কোয়ালিশান ফর পিস) গড়ে তুলেছে। ভারত মহাসাগরকে সামরিকায়ন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে তারা। তারা জোর প্রচারণা চালাচ্ছে যাতে তাদের নাগরিক অধিকার, তাদের আবাস এবং জীবিকা যেন এই উন্নয়নের কারণে তিগ্রস্থ না হয়। এই প্রতিরোধকে দেখতে হবে এ অঞ্চলে প্রধান শক্তিগুলোর কৌশলগত ভূমিকার দ”ষ্টিকোণ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের এখানে প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা রয়েছে আর তারই অংশ হিসেবে ভূমিকা রাখছে ভারত। নব্বইয়ের দশকে উদারীকরণ এবং বিশ্বায়নের নীতি গ্রহণ করার পর থেকেই নৌ নিরাপত্তার উপর ব্যাপক মনোযোগ দিয়েছে ভারত। ভারতীয় নৌবাহিনীর ম্যারিটাইম ডকট্রিন ২০০৯০তে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে গুরুত্বের কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। একই সাথে এ অঞ্চলে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টিও রয়েছে এতে। কৌশলগত দিক থেকে ভারত মহাসাগর শুধু ভারতের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র, চীন, এবং ফ”ান্সসহ অন্যান্য দেশের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মহাসাগরীয় এলাকার দেশগুলোর সম্পদের দিকে তাকালেই বড় দেশগুলোর এই আগ্রহের মর্ম বোঝা যায়। প”থিবীর পুরো তেল সম্পদের প্রায় ৫৫ শতাংশই রয়েছে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩০টির মতো দেশে। এর সাথে এখানে রয়েছে বিশ্বের পুরো স্বর্ণের ৪০ শতাংশের রিজার্ভ, ৩৫ শতাংশ গ্যাস এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়ামের রিজার্ভ। পারস্য উপসাগর থেকে যে পরিমাণ তেল ইউরোপ ও এশিয়ায় রফতানি হয়, তার ৯০ শতাংশই এই ভারত মহাসাগরের মধ্য দিয়ে পরিবাহিত হয়। এছাড়া লোহা, বক্সাইট, কোবাল্ট, নিকেল, টিটানিয়াম, লিথিয়াম, রাবার এবং টিনের মতো বাণিজ্যিক কাঁচামাল রয়েছে এখানকার দেশগুলোতে, যে কারণে এ অঞ্চলের গুরুত্ব বেড়ে গেছে।প্রতি বছর বিশ্বের পুরো তেলবাহি জাহাজের এক তৃতীয়াংশ এবং কন্টেইনারবাহী জাহাজের প্রায় অর্ধেকই ভারত মহাসাগর দিয়ে চলাচল করে। ২০১৫ সালে ভারত ও মরিশাস একটি সমঝোতা স্মারকে স্বার করে। আগালেগা দ্বীপে সমুদ্র ও বিমান পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের অংশ হিসেবে সেখানে ভারতের সহযোগিতায় এয়ারস্ট্রিপ এবং জেটি নির্মাণের ব্যাপারে ওই চুক্তি হয়। এছাড়া দ্বীপে অত্যাধুনিক টেলিকমিউনিকেশান যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং সেখানে ভারতীয় কর্মীদের বসবাসের ব্যবস্থা করাও ছিল চুক্তির অংশ। আনুষ্ঠানিকভাবে মরিশাস সরকার বলেছে,।
তারা দ্বীপে বসবাসরত ৩০০ নাগরিকের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন করতে চায়। কিন্থ বিরোধীদের প্রশ্নগুলো বার বার এড়িয়ে গেছে সরকার। একইসাথে আগালেগা দ্বীপের অধিবাসীদের কাছে এটা সুস্পষ্ট যে, সরকার সেখানে নৌ ঘাঁটি স্থাপন করতে চায়। এর অর্থ হলো দ্বীপ থেকে তাদের নিশ্চিত উচ্ছেদ করা হবে। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ