দেনা ৮০ কোটি টাকা, রাসিকের ২৭শ’ কর্মচারি ঈদের বেতন ভাতার দাবিতে আন্দোলনে
আফজাল হোসেন, রাজশাহী: রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বর্তমানে দেনা প্রায় ৮০ কোটি টাকা। এরমধ্যে বেতন-ভাতা বকেয়া সোয়া তিন কোটি, ঠিকাদারদের ২৮ কোটি, বিদ্যুতের ৩৬ কোটি টাকা রয়েছে। এবারের ঈদে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না প্রায় ২৭০০ কর্মচারী। বেতনের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন তারা।
দৈনিক মজুরি ভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারি রয়েছে ২২০০। আর স্থানীয় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারির সংখ্যা ৫০০। এবার ঈদের আগে বেতন-ভাতা-বোনাস পাচ্ছেন না ২৭০০ কর্মচারি। তাই গত সোমবার থেকে আন্দোলনে নেমেছেন তারা। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোমিন বলেন, কর্মচারিদের বেতন-ভাতা ও বোনাস দিতে প্রয়োজন ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। কিন্ত কোষাগারে রয়েছে মাত্র ৬০ লাখ টাকা। তাই কর্মচারিদের বেতন-ভাতা দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে ওয়াসার কাছে কিছু টাকা চাওয়া হয়েছে। তারা দিলে বৃহস্পতিবার কিছু কর্মচারির বেতন-ভাতা দেয়া যাবে।
সিটি করপোরেশন কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজমির আহমেদ মামুন বলেন, আগের মেয়রের আমলে তারা নিয়মিত বেতন-ভাতা পেয়েছেন। কোন মাসে সমস্যা হয়নি। কিন্ত বর্তমান মেয়রের আমলে প্রথম দিকে ঠিকমত বেতন-ভাতা পেলেও গত দুই বছর ধরে ঠিকমত পাওয়া যাচ্ছে না। বেতন-ভাতা নিতে তাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে।
এদিকে, রাসিকের বর্তমানে কত টাকা দেনা রয়েছে তা জানাতে পারেননি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। খোঁজ নিয়ে পরে জানানো যাবে বলে জানান তিনি। একই ধরণের কথা বলেছেন রাসিক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তিনি বলেন, বেতন-ভাতা, ঠিকাদারের পাওনা ও বিদ্যুৎ বিলসহ সব মিলিয়ে বর্তমানে রাসিকে দেনা রয়েছে ৭৬ থেকে ৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঠিকাদারা পাবে ২৮ কোটি, বিদ্যুৎ বিভাগ ৩৬ কোটি ও বেতন-ভাতা বকেয়া সোয়া ৩ কোটি টাকা।
সিটি করপোরেশনের অর্থনৈতিক দুর্দশার জন্য সরকারি বরাদ্দ না পাওয়াকে দায়ি করে মেয়র বুলবুল বলেন, এখন সিটি করপোরেশন চলছে নিজস্ব আয় থেকে। বিভিন্ন মামলায় ২৭ মাস সিটি করপোরেশনের বাহিরে ছিলেন। সে সময় যিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র ছিলেন তার আমলে সিটি করপোরেশনের সবচেয়ে বেশি দেনা বেড়েছে বলে দাবি করেন তিনি। অপরদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০০৮ সালে প্রায় ২২ কোটি টাকা দেনা নিয়ে রাসিকের দ্বায়িত্ব নেই। তার আমলে সে দেনা পরিশোধ করা হয়। ২০১৩ সালে দায়িত্ব ছাড়ার সময় রাসিকে উদ্বৃত্ব ছিল ছয় কোটি টাকার বেশী। অনিয়ম করে অর্থ তছনছ করে রাসিকে মোটা অংকের দেনায় ফেলা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে যিনি মেয়র নির্বাচিত হবেন তাকে এই মোটা অংকের দেনা নিয়ে রাসিকের দায়িত্ব নিতে হবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।