নির্মাণ ব্যয় ১০ কোটি টাকা আজ নতুন ভবনে উঠছে আওয়ামী লীগ
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : আজ আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন সকাল ১০ টায় কেক কাটার মাধ্য দিয়ে নতুন ভবনে দলীয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোর্শারফ হোসেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে নতুন কার্যালয়ের চাবি তুলে দেবেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন শেষে সভাপতিমন্ডলী, যুগ্ম সম্পাদকসহ অন্য নেতা ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জায়গা নির্ধারণ করে দেবেন।
দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর নতুন দশতলা ভবন হবে আওয়ামী লীগের স্থায়ী ঠিকানা। ৮ কাঠা জায়গার উপর ১০ কোটি টাকা ব্যায়ে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে বিশ্বমানের দলীয় কার্যালয়টি। পুরো কার্যালয়টি থাকবে ওয়াইফাই জোনের আওতায়।
গতকাল সরেজমিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গিয়ে দেখা গেছে, কার্যালয়ের সামনে স্টিলের বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’। পাশেই দলীয় প্রতীক নৌকা। সবার উপরে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। এরপর রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের ম্যুরাল। দুই পাশ কাঁচ দিয়ে ঘেরা। ভবনটির সামনের দেয়ালজুড়ে দলের সাইনবোর্ডসহ দলীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’, চার মূলনীতি খোদাই করে লেখা। এ ভবনের সামনে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে স্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ভবনটির প্রথম থেকে তৃতীয়তলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোর ৪ হাজার ১০০ বর্গফুট। চতুর্থতলা থেকে উপরের সব ক’টি ৩ হাজার ১০০ বর্গফুটের।
ভবনটিতে নবম তলায় বসবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তার ফ্লোরটি করা হয়েছে বুলেটপ্রুফ ডাবল গ্লাস দিয়ে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভাপতির কক্ষের সঙ্গে রয়েছে বিশ্রামাঘার ও নামাজের জায়গা। সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ রাখা হয়েছে অষ্টম তলায়। তার জন্যও রাখা হয়েছে সুপরিসর কক্ষ।
ভবনে সাত, আট ও নয় তলায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও সভাপতিম-লীর সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, বিষয়ভিত্তিক সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের কক্ষ রাখা হয়েছে। সপ্তম তলায় বসবেন দলের কোষাধ্যক্ষ।
দ্বিতীয় তলার সম্মেলন কক্ষে ৩৫০ জনের বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তৃতীয় তলায় ২৪০ জনের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চতুর্থ ও পঞ্চমতলায় সাধারণ অফিস, ডিজিটাল লাইব্রেরি, মিডিয়া রুম। ষষ্ঠতলায় আছে সম্মেলন কক্ষ। একদম উপরে দশম তলায় থাকছে ক্যাফেটোরিয়া।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ বলেছেন, নতুন ভবন উদ্বোধনের পর আওয়ামী লীগের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম চলবে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউর এ কার্যালয় থেকে। আর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় থেকে দলের নির্বাচনী কার্যক্রম ও সিআরআইসহ দলের অন্যান্য সংস্থার গবেষণামূলক কর্মকা- পরিচালিত হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নিজস্ব ফান্ড থেকে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হলেও নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্মাণ খরচ বেশ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের পুরোনো চারতলা ভবনটি লিজ গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয় ২০১১ সালে। এর পর দলটি নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল নতুন কার্যালয়ের নতুন ভবনের নকশা অনুমোদন দেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই পুরনো স্থাপনা ভাঙা শুরু হয়।