ধামরাইয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ
রাসেল হোসেন,ধামরাই(ঢাকা) : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনে আ.লীগ, বিএনপি ও জাপার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে সর্বত্রই চলছে আলোচনা। ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান সংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মালেক ছাড়াও ক্ষমতাশীল দল আ.লীগের আরও ৬ নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। তারা হলেন- সাবেক সংসদ ঢাকা জেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজির আহমদ,ধামরাই পৌর আ.লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র গোলাম কবীর মোল্লা, বাংলাদেশ কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের অতিরিক্ত প্রসিকিউটর অ্যাড. মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ আ.লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন, ঢাকা জেলা আ.লীগের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান,ঢাকা জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আলিম খান সেলিম।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান, ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান তমিজ,ঢাকা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও মহিলা সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সুলতানা আহমেদ ও ব্যারিস্টার এইচএম সানজিদ সিদ্দিকী। স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ মালেক বলেন,আ.লীগের মনোনয়ন চাইলেই পাওয়া যায় না। মনোনয়ন দেওয়ার মালিক একমাত্র প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। যে জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করে ,যার যত বেশি জনপ্রিয়তা তাকেই মনোনয়ন দেবে বলে আমি মনে করি। আমি এ সাড়ে চার বছরে প্রায় ৯ শত কোটি টাকার কাজ করেছি।যা আগের ৯ এমপি করতে পারেনি। আশা করছি আমি মনোনয়ন পাব। আমি ধামরাই উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে ১৪ টি ইউনিয়নের আ.লীগের চেয়ারম্যান বানিয়েছি। ধামরাই পৌর সভা হওয়ার পর কেউ আ.লীগের মেয়র বানাতে পারেনি, আমি সেখানে আ.লীগের মেয়র বানিয়েছি। ১০ম সংসদ নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এবারও মনোনয়ন পাব বলে আশা করছি। ঢাকা জেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ বেনজির আহমদ বলেন,আমার সময়ে আমি ৬শ ৬১ কোটি টাকার কাজ করেছি । ইতিপূর্বে কারও আমলে এত টাকার কাজ করতে পারেনি।আর জনগণ যাকে চাইবে প্রধানমন্ত্রী তাকেই মনোনয়ন দিবেন। ধামরাই পৌর আ.লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র গোলাম কবীল মোল্লা বলেন,আমি বিপুল ভোটে পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছি।দল যদি আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেয় তাহলে এবারও আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব। বাংলাদেশ কৃষলীগের কেন্দীয় কমিটির সহ সভাপতি ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের অতিরিক্ত প্রসিকিউটর অ্যাড.মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি মহান মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক ছিলাম ইছামতি ক্যাম্পের ডেপুটি ক্যাম চিফ ও মেঘনা ক্যাম্পের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলাম। শেখ হাসিনা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে গ্রেফতার হয়েছিলেন তখন তার মুক্তির জন্য আন্দলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। নিট টুয়েন্টি নাইন মামলাটি যখন রুজু হয় তখন সেই মামলাটি আমি ব্যারিস্টার শফিক আহামেদ এবং ফজলে নুর তাপসের সঙ্গে মামলাটি পরিচালনা করেছি। এরপর আহসান উল্লাহ মাস্টারের মামলাটিও রাষ্ট্র পক্ষের হয়ে পরিচালনা করেছি। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের অতিরিক্ত প্রসিকিউটর হিসেবে আমি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা বিশেষ করে কাদের সিদ্দিকী, মতিউর রহমান নিজামী ও কামরুজ্জামানের মামলা পরিচালনা করেছি। এসব দিক বিবেচনা করে আমার বিশ^াস জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে এবং তার একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে সুশীল সমাজে আমার গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দিবে বলে আমি বিশ^াস করি।মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব।
এ ব্যাপারে জিয়াউর রহমান বলেন, আমি যখন ক্ষমতায় ছিলাম তখন ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। দল মনোনয়ন দিলে আমি জয়লাভ করব। তমিজ উদ্দিন বলেন,আমি দুই দুই বারের উপজেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যান আমাকে দল মনোনয়ন দিলে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব। এদিকে সদ্য নব-গঠিত ঢাকা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়সিন ফেরদৌস মুরাদ বলেন, প্রতিটি আন্দোলনে নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি রাজপথে ছিলাম। দফায় দফায় মামলা ও হামলার শিকার হয়েছি। বর্তমানে আমি সতেরটি রাজনৈতিক মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে সময় পার করছি। দুঃসময়ে বেগম খালেদা জিয়ার পাশে থেকেছি এবং থাকব। কাজেই জনগণ ও দলীয় স্বার্থে মনোনয়নের জন্য জোর দাবি জানাব। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আমি সর্বদাই শ্রদ্ধাশীল। এসময় তিনি আরও বলেন আমাকে দল থেকে যদি মনোনয়ন দেয় তাহলে অন্যদের চেয়ে আমি বেশি ভোটে জয়লাভ করব। ব্যারিস্টার এইচএম সানজিদ সিদ্দিকী বলেন,আগামী সংসদ নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে হলে এবং দল আমাকে মনোনয়ন দিলে প্রার্থী হতে চাই। নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ-নিরপেক্ষ হলে বিএনপির জয় নিশ্চিত। তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব তারেক রহমানের উপস্থিতিতে লন্ডনের বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট বিটিশ-ল স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হই। মানুষের কল্যাণে কাজ করছি।আমার পিতাও বিএনপির সঙ্গে জড়িত।দলীয় গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু ধারায় রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।
ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ইসরাফিল খোকন বলেন, আমি দুই বার বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। জনগণ এখন পরিবর্তন চায় । আমি এবার বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হব।