নকলায় তাল শাঁসের কদর বেড়েছে, আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন অনেকেই
শফিউল আলম লাভলু, নকলা (শেরপুর) : প্রচ- গরমে বিভিন্ন হাটবাজারে জমে উঠেছে ফল তালশাঁসের বেচাকেনা। এতে বাড়তি আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন অনেক মৌসুমী ফল বিক্রেতা। শেরপুর জেলার সর্বত্রই কচি তালের শাঁস বিক্রির ধুম পড়েছে। বিশেষ করে জেলার নকলা উপজেলায় কচি তালের আমদানি ও তালের শাঁস বিক্রি সবার নজর কেড়েছে। স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন পেশা- শ্রেণি ও সব বয়সের মানুষের প্রিয় হয়ে উঠেছে এই তালের শাঁস বা বীজ বা আঁটি। এই তালের শাঁসকে অনেকেই তালশাঁস বললেও কেউ কেউ বলেন তালের বীজ, আবার কেউবা বলেন তালের চোখ বা তালকোরা বা আঁটি। বাজারে, রাস্তার মোড়ে কিংবা ফুটপাতে বিক্রির ধুম পড়ে যায়। ইতোমধ্যে অনেকেই এই কচি তাল বাজারে বিক্রির জন্য তুলেছেন। বিক্রেতারা তাল কেটে তালের শাঁস বা আঁটি বের কর গ্রাহক বা ক্রেতাদের হাতে তোলে দিচ্ছেন। প্রতিটি বীজ বা শাঁস বিক্রি করছেন ৫ টাকা করে। আর তালের আকার অনুযায়ী প্রতিটি তাল ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা করে বেচাকেনা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার নকলা হাটের দিন সরজমিনে দেখা যায়, নকলা বাজারের কাচারী মোড়, থানার সামনে, উত্তর বাজার, পশ্চিম বাজার, হলমোড়, নালিতাবাড়ী যাওয়ার মোড়সহ বেশ কিছু তালের শাঁস বিক্রির দোকান বসেছে। এসব দোকানে ক্রেতা রফিক, কালাম, শফিক, আরজিনা ও খুকিসহ অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানান, গরমে তালের শাঁস বেশ উপকারী। তালশাঁস বিক্রেতা দড়িপাড়া এলাকার উজ্জল মিয়া জানান, তারা নকলার ধনাকুশা, ছতরকোণা, ডাকাতিয়াকান্দা, গজারিয়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গাছ চুক্তি তাল কিনে আনেন। গাছের মালিকদের কাছ থেকে প্রতিটি তালের পাইকারি কিনা দাম ৫ টাকা থেকে ৭ টাকা।
পরিবহণ ও তাল পাড়ার খরচ নিয়ে প্রতিটি তালের খরচ পড়ে ৭ টাকা থেকে ৯ টাকা। সারাদিন গরম থাকলে দৈনিক সাড়ে ৪ হাজার টাকা থেকে ৭ হাজার টাকার তালের শাঁস তারা বিক্রি করতে পারেন। এতে প্রতিদিন তাদের লাভ হয় দেড় থেকে ২ হাজার টাকা। দিনের শেষে লাভের টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েও তাদের সংসার ও ছেলে মেয়ের লেখা-পড়ার খরচ চলে যায়।
ধনাকুশা এলাকার তাল গাছের মালিক আশকর আলী জানান, এক মৌসুমে প্রতি গাছের তাল এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে বিক্রি করা যায়।
বিভিন্ন এলাকার পাইকার বা মৌসুমী ফল বিক্রেতারা এসে গাছথেকে কচি অবস্থায় তাল পেড়ে নিয়ে যান। রোপনের পরে গাছ বড় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত গরু-ছাগলের হাত থেকে রক্ষা করা ছাড়া এতে কোনো বাড়তি খরচ করতে হয় না। তাছাড়া তাল গাছ বর্জ্রপাতের ক্ষতি থেকে জানমাল রক্ষা করে।