আফগানিস্তানের বিভিন্ন অংশে সমান্তরাল রাষ্ট্র গঠনে সফল তালেবান
সাউথএশিয়ান মনিটর : অনেকে বলে যে আফগানিস্তানের তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পুরুষদের নামাজ পড়ার জন্য প্রহার করা হয়, মেয়েদের স্কুলে না গিয়ে বাড়িতে থাকতে বাধ্য করা হয়, কিন্তু ওইসব এলাকার বিপুলসংখ্যক লোকের সাক্ষাতকারে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র পাওয়া গেছে। অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাওয়া চিত্রটি বেশ ঝামেলাপূর্ণও।
বৃহস্পতিবার ওভারসিস ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান সরকারের অধীনে জীবন সমান্তরাল শাসনের আধুনিক ব্যবস্থা। বিদ্রোহীদের আংশিক বা পুরো নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রতিটি এলাকায় স্বাস্থ্য, বিচার ও আর্থিক পরিষেবার ব্যবস্থা রয়েছে। সাতটি প্রদেশের ২০টি জেলায় ওই সমীক্ষা চালানো হয়। অ্যাশলে জ্যাকসনের লিখিত ওই প্রতিবেদনের প্রধান উপসংহার হলো এই যে তালেবান আফগানিস্তানের বিশাল এলাকায় শাসন চালালেও তারা লোকজনকে প্রভাবিত করার ব্যাপারে তেমন আগ্রহী নয়। তারা তাদের মতবাদ চাপিয়ে দিতে চায় বলে যে ধারণা প্রচলিত, এই সমীক্ষা তার সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র উপস্থাপন করছে। এতে আরো বলা হয়, আফগান যুদ্ধ যদি কখনো সমাধান হয়, তবে তারা কেবল রাজনৈতিক জীবনে অংশ নিয়েই ক্ষান্ত থাকতে চায় না, তারা নিজেদেরকে পুরো দেশ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত করতে চাচ্ছে। প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, অনেক এলাকায় তালেবান প্রতিনিধিরা প্রায় নিয়মিত স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা, সাহায্য সংস্থা ও অন্যান্য গ্রুপের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করে। তারা স্বাস্থ্য পরিচর্যা, শিক্ষা ও অন্যান্য পরিষেবার উন্নত ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করে। তালেবান আমলারা কর সংগ্রহ করে, বিদ্যুত বিল আদায় করে, তাদের বিচারকেরা ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা ফয়সালা করে। বিচার কার্যক্রমে অংশ নিতে তাদের অনেকে মোটরবাইকে করে চলাফেরা করে। প্রথম তালেবান ছায়া সরকার প্রায় এক যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আফগান ও বিদেশী সামরিক হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও কিভাবে তা বিশাল এলাকায় ছড়িয়েছে, তা প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে। প্রথমে শক্তিপ্রয়োগ ও ভীতি প্রদর্শন করা হলেও তারা স্থানীয় লোকজনকে শাসন করার জন্য সতর্কভাবে এগুতে থাকে। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ
তারা জবাবদিহি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে, জনগণের সমস্যা সমাধানে মনোযোগী হয়। অনেকে বলেছে, তারা সরকারি নিয়ন্ত্রণের চেয়ে অনেক বেশি সৎ ও কার্যকর ব্যবস্থা পেয়েছে।
বর্তমানে তালেবান নেতৃত্ব নিজেদের বিদ্রোহী মনে করে না, বরং সরকার পরিচালনা করার জন্য অপেক্ষমান দল মনে করে বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে। ন্যাটো বাহিনী যত বেশি করে প্রত্যাহার করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে পেশাদারিত্ব তত বাড়ছে। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ