টাকি মাছের কৃত্রিম প্রজননে পোনা উৎপাদনে সফলতা
শোভন দত্ত: কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে টাকি মাছের পোনা উৎপাদনে সফল হয়েছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা। বিএফআরআই-এর সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা এই সফলতা লাভ করেছেন।
কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় মৌসুমী জলাশয়ে অন্যান্য প্রজাতির মাছের সাথে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদে টাকি মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা যাবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ গতকাল বাসস’কে এই সফলতার কথা নিশ্চিত করেছেন।
টাকি মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন বিষয়ক গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের প্রধান ড. খোন্দকার রশীদুল হাসান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গতকাল বাসস’কে বলেন, তার নেতৃত্বে সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপ-কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শওকত আহমেদ ২০১৭ সালের প্রথম দিকে এই গবেষণা কাজ শুরু করেন। তারা নিরলসভাবে গবেষণা করে চলতি বছরের এপ্রিলে ‘কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদনে’ সফলতা লাভ করেছেন।
গবেষণায় তারা দেখতে পেয়েছেন, কৃত্রিম প্রজননে টাকি মাছের পোনা বাঁচার শতকরা হার প্রায় ৬০ ভাগ। এই পোনা উৎপাদন ও নার্সারী ব্যবস্থাপনার কলাকৌশল মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে যদি সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া যায় তাহলে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি জীব বৈচিত্র সংরক্ষণসহ এই প্রজাতিটি ভবিষ্যতে বিলীন হওয়ার হাত রক্ষা করা যাবে বলে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন।
সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের প্রধান বাসস’কে আরও বলেন, “কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় মৌসুমী জলাশয়ে অন্যান্য প্রজাতির মাছের সাথে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের মাধ্যমে মাছটির উৎপাদন বৃদ্ধি করা যাবে। এতে চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।”
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এক সময় দেশের নদ-নদী ও খাল-বিলে প্রচুর টাকি মাছ পাওয়া যেত। আবাসস্থল বিনষ্ট ও মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে টাকি মাছ মানুষের খাদ্য তালিকা হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। এ প্রেক্ষিতে বিএফআরআই সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপ-কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা এ মাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন ও চাষাবাদের উপর ২০১৭ সাল গবেষণা কাজ শুরু করে।
বিএফআরআই মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, বিলুপ্তপ্রায় দেশিয় মাছের সংরক্ষণ ও চাষাবাদ কৌশল উন্নয়নের লক্ষ্যে বিএফআরআই গবেষণা পরিচালনা করে আসছে। ইতোমধ্যে ১৬টি মাছের পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেছেন।