ভোগান্তিতে মিরপুরবাসী ডিএনসিসির আইডিআইপি প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি
শাকিল আহমেদ: রাজধানীর মিরপুরে চলছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ইমপ্রুভমেন্ট অব ড্রেন অ্যান্ড ইমপ্রুভমেন্ট অব রোডস অ্যান্ড ফুটপাতের (আইডিআইপি) প্রকল্পের কাজ। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে থেমে থেমে এ কাজ চলায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজট বাড়ছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে এলাকাবাসী। আর এ জন্য পরিকল্পনার অভাবকে দায়ী করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে মেগা প্রকল্পের আওতায় ৫টি অঞ্চলে ১ হাজার ২৬ কোটি টাকা ব্যায়ে ইমপ্রুভমেন্ট অব ড্রেন অ্যান্ড ইমপ্রুভমেন্ট অব রোডস অ্যান্ড ফুটপাতের (আইডিআইপি) ৬২টি প্যাকেজের কাজ শুরু করে ডিএনসিসি। এর মধ্যে প্রথম পর্বে ২৬টির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৩৬টি প্যাকেজের কাজ চলমান রয়েছে। যা চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
(আইডিআইপি) প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরের এপ্রিল থেকে মিরপুরে ২২টি প্যাকেজের ফুটপাত, ড্রেনেজ ও সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করে ডিএনসিসি যা ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। মাত্র ২০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান, ডিএনসিসির অঞ্চল-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী ইনামুল কবির। তিনি বলেন, কাজের ধীরগতির মূল কারণ মিরপুরের অনেক যায়গায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখল করে বসবাস করছে এলাকার বাসিন্দারা। এগুলো উচ্ছেদ করতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে এবং বৃষ্টির কারণে থেমে থেমে কাজ করতে হচ্ছে তাই সময় বেশি লাগছে। আবার অনেক এলাকায় সরু রাস্তার কারনে ট্রাক ঢুকতে না পাড়ায় সময় মতো মাটি সরানো যাচ্ছে না। আমরা মানুষের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখেই কাজ করছি। বর্ষায় উন্নয়ন কাজ করলে তো একটু ভোগান্তি হবেই। চলতি সপ্তাহ থেকে কাজের গতি বাড়বে বলে জানান এই প্রকৌশলী।
ডিএনসিসির অঞ্চল-২ এর মিরপুর ১০, ১১, ১২, ও ১৩ নং ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ব্লকে চলছে সড়ক, ড্রেনেজ ও ফুটপাত নির্মাণের কাজ। রাস্তা কেটে সড়কের ওপরে যেখানে সেখানে রাখা হয়েছে মাটি, ময়লা-আবর্জনা ও সøাবসহ নির্মাণ সামগ্রী। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদামাটিতে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে এসব সড়ক।
মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের সি ব্লকের ৩ নম্বর রোডে চলছে রাস্তা মেরামত ও ড্রেনেজের কাজ। রাস্তার মাঝখানে বড় করে ম্যানহোলের জন্য গর্ত করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে পথচারিদের জন্য কোনো সতর্কতা সংকেত রাখা হয়নি। রাস্তার ওপর ফেলে রাখা হয়েছে ইট, বালু, ম্যানহোলের রীন, সøাবসহ প্রয়োজনীয় নির্মাণ সামগ্রী। পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে রিকশা ও পথচারীরা। যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। মিরপুর ১২ নম্বরের বি ব্লকে রাস্তার ওপরে মাটি ফেলে ড্রেনেজের কাজ করছে নির্মান শ্রমিকরা। রাস্তা কাটার কিছুক্ষণ পরই আবার বৃষ্টির পানিতে ভরে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে গর্তের ভেতর পানি জমে থাকায় ভোগান্তিতে পড়ছে এই এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়া কালশি, বেনারশি পল্লীসহ অধিকাংশ সড়কের বেহাল অবস্থা।
মিরপুরের বাসিন্দা এল আর বাদল বলেন, দীর্ঘমেয়াদি এ কাজে এ এলাকার রাস্তাগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কোনো রিকশা আসতে চায় না। আর যদি আসেও তা হলে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয়। নির্মাণ নীতিমালা না মেনে রাতের আধারে নিম্ন মানের ইট সিমেন্ট দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে এসব রাস্তা কদিন টিকবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
কাজের মান সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাঈদ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির মৌসুমে কাজ চলায় ভোগান্তি একটু হবেই, তবে এর সুফলও তারা পাবে। আমাদের ঠিকাদারদেরও কিছু গাফলতি আছে, যা অস্বীকার করা যাবে না। তবে আমরা সব সময় কাজের মনিটরিং করছি। যদি কেউ অনিয়ম করে সাথে সাথে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সম্পাদনা: আনিস রহমান