দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করতে হবে দুর্নীতিবাজ বাদ, মনোনয়ন পাবে জনপ্রিয়রা
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতিবাজরা নয় নিজ এলাকায় যার জনপ্রিয়তা আছে তাকেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে। যেসব এমপি টাকা নিয়ে কাজ করেন না, দুর্নীতি করেন, তারা নমিনেশন পাবেন না। নমিনেশন দেওয়া হবে এলাকায় যার জনপ্রিয়তা আছে তাকেই। গতকাল আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গণভবনে দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। দলের তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, কে প্রার্থী সেটা বড় কথা নয়, নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে জনগণের কাছে যেতে হবে। নির্বাচনে আমরা যাকে প্রার্থী করবো, নৌকা মার্কা দেবো, তার পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে। এজন্য এখন থেকে জনগণের কাছে যেতে হবে। নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে হবে। দলের মধ্যে ঐক্য রাখতে হবে, ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, কেউ দলের বিরুদ্ধে কথা বললে তার মনোনয়ন পাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ভোটের রাজনীতি করতে হলে উন্নয়নের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।
দুঃসময়ে দলের হাল ধরে রাখা কর্মীরা যাতে অবহেলিত না হয় সেদিকে নজর রাখা হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের স্বার্থে মহাজোট করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি লীগের।
বিএনপির রাজনীতির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিবাজদের দলে রাখার জন্য দলের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে বিএনপি নিজেদের দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে প্রমাণ করেছে। এসময় আওয়ামী লীগ সরকার যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অর্থনৈতিক নীতিমালাকে সময় উপযোগী করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
দলে তৃণমূলকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে উন্নয়ন করেছি তাতে মানুষ নৌকায় ভোট দেবে না, তা হতে পারে না। যদি না দেয় সেজন্য তৃণমূলের আপনারাই দায়ী থাকবেন। কারণ আপনারা সঠিকভাবে মানুষের কাছে যেতে পারেননি। তিনি বলেন, প্রার্থী হওয়ার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু প্রার্থী হতে গিয়ে আমার দলকে বদনামে ফেলবে, এটা কোনও মতেই মেনে নেবো না। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। আমি এগুলো কিন্তু রেকর্ড করছি। ১০ বছর সরকারে থাকার পর যদি কেউ দলের বিরুদ্ধে বদনাম করে তাহলে জনগণ তো তাকেও ভোট দেবে না। এটা হলো বাস্তবতা।’
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন, নির্বাচন মানেই তা চ্যালেঞ্জিং হবে। এটা কিন্তু আমাদের জন্য একটানা তৃতীয়বার। এই তৃতীয়বারের নির্বাচনে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’
দলে অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয়দাতাদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকার কারণে বিভিন্ন দল থেকে আমাদের দলে ছুটে আসছে। আর গ্রুপ করার জন্য বাছ-বিচার না করে যাকে পাচ্ছে তাকে নিয়ে নিজের শক্তি দেখাতে চান। এরা আসে মধু খেতে, এরা আপনার সঙ্গে থাকতে আসে না। কাজ করতে আসে না। আমি সারাদেশে সার্ভে করে বের করেছি। কাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তাদের মধ্যে কারা আমার দলের। সেই তালিকা আমার কাছে রয়েছে। কাজেই বলবো, কেউ যদি তাদের প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন এখনই বিদায় করেন। দলের লোক আপন নয়, বাইরের লোক আপন হয়ে গেছেÑ এটা মনে করার কোনও সুযোগ নেই। তারা কিন্তু আপন হবে না। নিজের লোকদের চিনতে হবে। তিনি বলেন, জোট করেছি, মহাজোট করেছি। দলের স্বার্থে এটা করতে হয়েছে। আগামীতেও আমরা এটা করবো। আমরা বন্ধু হারাবো না। সবাইকে নিয়েই থাকতে চাই। এজন্য যতটুকু আত্মত্যাগ করতে হবে তা করবো। বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বটা এক্ষেত্রে বেশি।