ত্রাণ নয়, ভাঙনের সমাধান চায় বানভাসী মানুষ
স্বপন কুমার দেব, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মন্তাজ আলী, দিপক দত্ত জানান, মনু নদের ভাঙ্গনের প্রবল স্রোতে আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে সবকিছইু নিয়ে গেছে। এখন আমরা পথে বসেছি, আমাদের ঘর মেরামত করার মত সামর্থ্য নেই। আমরা এখনও কোন সরকারি ত্রাণ পাইনি।
তারা জানান, আমার বসতভিটা থেকে পানি নেমেছে কিন্তু কাঁচা ঘর থাকার কারণে ঘরের বেড়া ভেঙ্গে পড়ছে, তাই এখন নিজের ঘরটা ঊঠাতে পারছি না। এখন নিজেদের খাবারের চিন্তা করব নাকি, ঘর মেরামত করব সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। তাছাড়া এখন আষাঢ় মাস। সামনে ভারি বর্ষণ হবে। নদীর ভাঙন দিয়ে যদি আবার পানি বের হয়। তাই আগে ভাঙনের কবলিত এলাকা সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে দ্রুত মেরামত করার জন্য আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি আমরা।
সরজমিনে জেলার কুলাউড়া, রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মনু নদী ভাঙনের প্রবল ¯্রােতে অনেকের ঘরবাড়ি, অনেকের কাঁচা ও টিন সেডের বেড়া ভেঙ্গে গেছে। তারা ক্ষতিগ্রস্থ বেড়া মেরামত করছেন, কেউ বন্যার ক্ষতিগ্রস্থ স্থানে মাটি ভরাট করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখন এসব মানুষ খাবে না, ঘরবাড়ি মেরামত করবে সে চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানান, ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মানুষ সাহায্য সহযোগিতা এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু দুর্ভোগের শিকার মানুষের ত্রাণের প্রতি আগ্রহ নেই। মানুষ চায় মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে যেসব স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে সেইসব স্থান দ্রুত মেরামত করা হউক। যাতে আবার বৃষ্টিপাত হলে লোকালয়ে পানি ঢুেক ব্যাপক ক্ষতি করতে না পারে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষোভের সাথে জানান, নদীর এই ভাঙা গড়ার খেলায় আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ও ঠিকাদাররা। বাঁধ মেরামতে বরাদ্ধকৃত অর্থ ঠিকাদার আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের পকেট ভারী হয়। তাই ভারী বৃষ্টিপাত হলেই ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে আবারও পানি প্রবেশ করবে। এজন্য দ্রুততর সময়ের মধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা উচিত। আর সেটা সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে করার জোর দাবি জানান এলাকাবাসী। কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বি জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় সম্পুর্ণ বাড়িঘর বিধ্বস্থ ও ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থরা প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকা করে ঘর বানানোর জন্য বরাদ্দ পাবেন।