জাতীয় ফল মেলায় ৫০ লাখ টাকার ৮০ মেট্রিক টন আমসহ ফল বিক্রি
মতিনুজ্জামান মিটু: তিন দিনের জাতীয় ফল মেলায় ৫০ লাখ টাকার ৮০ মেট্রিক টন আমসহ ফল বিক্রি হয়েছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। এদিকে গতকাল শেষ হয়েছে রাজধানীর খামারবাড়ির তিনদিনের জাতীয় ফল প্রদর্শনী ২০১৮। আ.কা. মু গিয়াস উদ্দিন মিলকী অডিটরিয়ামে পুরষ্কার দেয়ার মাধমে কৃষি মন্ত্রণালয় এ আয়োজন সম্পন্ন করে। সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ উইং) সৈয়দ আহম্মদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ অমিতাভ দাস । স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান। আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান। গত ২২ জুন ‘অপ্রতিরোধ্য দেশের অগ্রযাত্রা, ফলের পুষ্টি দেবে নতুন মাত্রা’ এ প্রতিপাদ্যে শুরু হয় এ মেলা।
ফল প্রদর্শনীতে অংশগ্রহনকারী স্টল, ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, প্রগতিশীল কৃষক, প্রতিষ্ঠান পর্যায় ও সর্বোচ্চ ফলদ বৃক্ষ রোপনকারী জেলাকে পুরষ্কৃত করা হয়। জাতীয় ফল প্রদর্শনীতে আম, কাঁঠাল, কলাসহ দেশি বিদেশি বিভিন্ন বাহারি ফল প্রদর্শনের জন্য সরকারি স্টল হিসেবে প্রথম স্থান অর্জনকারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে ক্রেষ্ট ও সনদ পত্র দেয়া হয়। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) । তৃতীয় স্থান অর্জন করে যৌথভাবে কৃষি তথ্য সার্ভিস, কৃষি বিপনন অধিদপ্তর ও হর্টেক্স ফাউন্ডেশন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে যথাক্রমে সুপার চেইন শপ আগোরা, মায়ের দোয়া নার্সারী ও ভাই ভাই ফল বিতান (রিপন)। ব্যক্তি পর্যায়ে খুলনার শেখ শাখাওয়াত হোসেন, চট্টগ্রামের মো. কামাল উদ্দিন ও রংপুরের শ্রী মথুর চন্দ্র বর্মন যথাক্রমে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন করে। ঢাকা শহরে বাড়ির ছাদে ফল বাগান সৃজনে বিশেষ সফলতার জন্য পুরস্কার পান কদমতলীর মনি মালা মন্ডল, আদাবরের আব্দুল গণি তালুকদার এবং আফরোজা আক্তার, শাহবাগের মো. আনোয়ার হোসেন ও তেজগাঁয়ের সিদ্দীকা বেগম। প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে খাগড়াছড়ির এডহক ফরমেশন রিক্রুট ট্রেনিং সেন্টার (এএফআরটিসি) ও খুরনার জনতা বহুমুখী সমবায় সমিতিকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। সর্বোচ্চ ফলদ বৃক্ষ রোপনকারী জেলা হিসেবে কুমিল্লা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা যথাক্রমে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন করে। ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১৫জন ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে নগদ অর্থ, ক্রেষ্ট ও সনদ দেয়া হয়।
এবারের ফল প্রদর্শনীতে ৯টি সরকারি ও ৫১টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট ৮১টি স্টল ছিলো। আমের ১০২টি জাতসহ ৯৯ প্রজাতির ফল প্রদর্শীত হয়। এর মধ্যে ছিলো প্রচলিত ৫৪, অপ্রচলিত ৩৬ ও বিদেশি ফলের ৯টি জাত। প্রদর্শনীতে জাতীয় ফল কাঁঠালের একটি বিশেষ কর্ণারে কাঁঠাল দিয়ে তৈরী ১২৩ রকমের মুখরোচক খাবার প্রদর্শন করা হয়। আয়োজকরা জানান মেলায় আমসহ অন্যান্য ফলের ৫০ লাখ টাকার অধিক ৮০টন ফল বিক্রি হয়।