রাষ্ট্রায়ত্ত ৮টি ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ ৮শ কোটি কমে ৪৩ হাজার কোটি টাকা
সোহেল রহমান: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে অলস অর্থের পরিমাণ কমেছে। গত ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ৮টি বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ ৭৯১ কোটি টাকা কমেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সদ্য প্রকাশিত ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিবেদন ২০১৭-১৮’-তে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল) বাণিজ্যিক ব্যাংক ও দু’টি বিশেষায়িত ব্যাংকে (বিকেবি ও রাকাব) মোট অলস অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ১২০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর আগের পঞ্জিকা বছর শেষে অলস অর্থের পরিমাণ ছিল ৪৩ হাজার ৯১১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল) বাণিজ্যিক ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৯ হ্াজার ৬৬৯ কোটি টাকা। প্রতিবেদনে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি অলস অর্থ রয়েছে সোনালী ব্যাংকে। এ ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ৩১ হাজার ১২৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের বছর ২০১৬ সালে ছিল ৩৩ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। এর পরেই রয়েছে জনতা ব্যাংক। এ ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ২ হাজার ৭৮১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের বছর ছিল ৫৭০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটিতে অলস অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২ হাজার ২১০ কোটি টাকা। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ শেষে জনতা ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৭৯৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে রূপালী ব্যাংক। এ ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ২ হাজার ৪৯২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের বছর ছিল ২ হাজার ১৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে অলস অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৩৪৬ কোটি টাকা। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ শেষে রূপালী ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫০৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। পরের অবস্থানে রয়েছে বেসিক ব্যাংক। এ ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ১ হাজার ৪২০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আগের বছর ছিল ৩ হাজার ৪৬৮ কোটি ৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে অলস অর্থের পরিমাণ কমেছে ২ হাজার ৪৭ কোটি টাকা। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ শেষে বেসিক ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৯৪৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। এ ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ১ হাজার ৪২০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগের বছর ছিল ২৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে অলস অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ শেষে বেসিক ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৯৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর পরের অবস্থানে রয়েছে বিডিবিএল ব্যাংক। এ ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ৪২৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। আগের বছর ছিল ৪১৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে অলস অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ১২ কোটি টাকা। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ শেষে রূপালী ব্যাংকে অলস অর্থের পরিমাণ আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংক দু’টিতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে অলস অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৫১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে (বিকেবি) অলস অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ২ হাজার ৩২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের বছর ছিল ২ হাজার ৩০১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে অলস অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ২৩ কোটি টাকা। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ শেষে বিকেবি-তে অলস অর্থের পরিমাণ আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
অন্যদিকে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে (রাকাব) অলস অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ১ হাজার ১২৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের বছর ছিল ১ হাজার ২২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে অলস অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার ১০৪ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত মার্চ শেষে রাকাব-এ অলস অর্থের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৭৬৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।