কমলগঞ্জে ধলাই নদীতে বাঁধ নির্মাণের ৩ মাসের মধ্যে নদীগর্ভে
স্বপন কুমার দেব, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মণিপুরী অধ্যুষিত গ্রাম হিরামতি পাশে ধলাই নদীর বন্যা প্রতিরক্ষার ৮০০ ফুট বাঁধটি নতুন ভাবে নির্মাণের ৩ মাসের মধ্যে প্রায় ৫০০ ফুট বাঁধটির ফাটল দেখা দিয়েছে। বাঁধের অধিকাংশ চলে গেছে নদীগর্ভে। হিরামতি এলাকার বাঁধটি হয়ে উঠেছে চরম ঝুঁকিপুর্ণ। এছাড়া ছয়ছিড়ি, শিমুলতলা, কাটাবিলসহ আরো কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বাঁধগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় হিরামতি গ্রামসহ আতঙ্কে রয়েছেন চা বাগান ও পাশের কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজারও পরিবার।
মাধবপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানু, ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রনজিৎ কুমার সিংহ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ এলাকার সচেতন লোকজন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিরামতির বাঁধ পরিদর্শন করে বাঁধের বেহাল অবস্থা দেখে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম কাছে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধটি স্থায়ীভাবে সংস্কার এবং নদীর অপরপাশে জেগে উঠা চর কাটার দাবি জানিয়েছেন। এলাকাবাসী জানান, সঠিক সময়ে ধলাই নদীর হিরামতির বাঁধটি স্থায়ীভাবে ব্লক দিয়ে মেরামত না করা গেলে আর নদীর পানি বাড়লেই বাঁধ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে শতভাগ। কারণ বাঁধটি সামান্য একটু জায়গা বাকি রয়েছে ভাঙতে। টানা বৃষ্টি শুরু হলে যেকোনো মুহুর্তে তলিয়ে যেতে পারে মাধবপুরসহ অনেক এলাকা। নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েক হাজার পরিবার।
যথাসময়ে ধলাই নদীর হিরামতির বাঁধটি স্থায়ীভাবে ব্লকের মাধ্যমে মেরামত না করা গেলে এখানে বাঁধ দিয়ে কোন লাভ নেই। মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু বলেন, এ ইউনিয়নের হীরামতি, শিমুলতলা, ছয়ছিড়ি, কাটাবিলসহ কমপক্ষে ৭/৮ টি স্থানে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কমলগঞ্জে সাম্প্রতিক কালের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যার পানি বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ঢুকে বেশ কিছু এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে গিয়ে বীজতলা বিনষ্ট হয়েছে।
এদিকে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের বেশ কিছু অংশ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে স্বীকার করে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ধলাই ও মনু নদের ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। ইতোমধ্যে কমলগঞ্জ পৌর এলাকার করিমপুর, মাধবপুর ইউনিয়নের কাটাবিলসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সম্প্রতি বন্যায় ভেঙে যাওয়া বাঁধগুলোর কাজ করা হয়েছে। বাকীগুলো জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের উদ্যোগে গ্রহণ করা হবে। এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন একটি টিম কমলগঞ্জ সফর করে গেছেন। শিগগিরই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।